দৃষ্টিনন্দন ক্বীন ব্রিজ আর আলী আমজাদের ঘড়ি আবারও নির্মিত হচ্ছে সিলেটে!
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০১৭
দেলোয়ার হোসাইন, সিলেট থেকে:
‘সিলেট’ শব্দটি যখন আপনি উচ্চারণ করেন নিশ্চিতভাবে বেশ কয়েকটি নান্দনিক স্থান আর দৃশ্য আপনার চোখে ভেসে উঠে। হতে পারে সেটা প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম। ক্বীন ব্রিজ আর ঐতিহাসিক নবাব আলী আমজাদের ঘড়ি তার মধ্যে অন্যতম। সুরমা নদীর ওপর স্থির দাঁড়িয়ে থাকা ক্বীন ব্রিজ আর তার গা ঘেঁষে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষীয় আলী আমজাদের ঘড়ি। ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষী সিলেটের ক্বীন ব্রিজ আর আলী আমজাদের ঘড়ি প্রতিদিন শতশত দর্শনার্থীদের সৌন্দর্য বিলিয়ে দিচ্ছে।
দৃষ্টিনন্দন ক্বীন ব্রিজ আর আলী আমজাদের ঘড়ি আবারও নির্মিত হচ্ছে সিলেটে! জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ১ম গেইট দিয়ে প্রবেশ করে ডানদিকে তাকালেই দেখতে পাবেন ক্বীন ব্রিজ আর আলী আমজাদের ঘড়ি। ক্বীন ব্রিজ আর আলী আমজাদের ঘড়ি সাথে থাকবে চা বাগান, পাহাড়, পাহাড় থেকে নামবে ঝর্ণাধারা যা আবার সুরমা নদীতে মিলিত হবে! শুধু তাই নয়, ১৯৪০ সালে জেলা প্রশাসনের ব্যবহৃত দুর্লভ জিপটিও আপনি দেখতে পারবেন। ভাবছেন কিভাবে সম্ভব? আসলেই তাই। এসব কেবল দেখার জন্য।
অপরদিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে প্রকৃতি কণ্যা ম্যুরাল। যেখানে চা বাগান, চেঙ্গের খাল, বাদাঘাট এবং বিছানাকান্দির অপরূপ দৃশ্য তুলে ধরা হবে। এছাড়া কার্যালয়ে ঠিক সামনে গড়ে তোলা হয়েছে মাশরুম আকৃতির ছোট ছোট ছাউনি। এছাড়াও সিলেটের নাগরী লিপি নিয়ে কার্যালয়ের নিচ তলায় সিরামিক দিয়ে প্রায় ১০ ফুট উচ্চতা এবং ৮ ফুট প্রস্থের আরো একটি ম্যুরাল তৈরি করা হয়েছে।
সিলেটকে পর্যটন নগরী ঘোষণার পর সৌন্দর্য বর্ধনে জেলা প্রশাসন বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। ‘গৌরব সিলেট’ তার মধ্যে অন্যতম একটি প্রকল্প। প্রায় ৩০ শতক ভূমির উপর প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ২০ জুন শুরু হয়েছে। চলতি মাসেই শেষ করা যাবে বলে আশা করা যায়। সেপ্টেম্বরে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। ‘গৌরব সিলেট’ এর নকশা করেছেন দুই চিত্রশিল্পী ইসমাইল গণি হিমন ও আলী দেলোয়ার।
এ বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সিলেটকে ‘প্রকৃতি কন্যা’ ঘোষণার পর পরই সিলেটের পর্যটন নিয়ে নতুন করে ভাবছে সরকার। আমরা চাচ্ছি পুরো সিলেটকে একটি নিরাপদ পর্যটন জোন হিসেবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে। তারই অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে দৃষ্টিনন্দন করা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যেই কাজ শুরু হয়ে গেছে। তিনি বলেন জেলা প্রশাসক (মো. রাহাত আনোয়ার) মহোদয়ের চিন্তার একটি সুন্দর বাস্তবায়ন হচ্ছে ‘গৌরব সিলেট’।
উল্লেখ্য, ১৯৩৩ সালে সুরমা নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে বিভাগ। ১৯৩৬ সালে ব্রিজটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়। নতুন এই ব্রিজটির নামকরণ করা হয় গভর্নর মাইকেল ক্বীনের নামে। অপর দিকে ১৮৭৪ সালে তৎকালীন বড়লাট লর্ড নর্থ ব্রুক সিলেট সফরে আসলে তাঁর সম্মানে কুলাউড়ার পৃথিম পাশার জমিদার নবাব আলী আহমদ খানঘড়িটি নির্মাণ করলেও এর পরিচিতি পায় তার ছেলে নবাব আলী আমজাদের ঘড়িঘর নামে।