ব্রেক্সিট বিল জনসম্মুখে প্রকাশের দাবিতে চাপে থেরেসা মে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭
লন্ডন, ৭ ডিসেম্বর: একদিকে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলে অসন্তোষ। অন্যদিকে বিরোধী লেবাররা তৎপর। তারা কনজারভেটিভ দলের এমপিদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন যেন, তারা লেবার দলের একটি পরিকল্পনায় সমর্থন দেন। আর তা হলো ব্রেক্সিট বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বৃটেন কি পরিমাণ অর্থ দেবে তা প্রকাশ করা। লেবাররা চাইছে এ বিষয়টি খোলামেলা করতে। এমনকি এ নিয়ে পার্লামেন্টে ভোটও চাইতে পারে তারা।
ফলে সব মিলিয়ে বেশ চাপে রয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তার ওপর এই চাপ ক্রমশ বাড়ছে। বৃটিশ পার্লামেন্টের সাবেক কিছু মন্ত্রী, এমপি ও লর্ডরা বলছেন, ব্রেক্সিট বিল সম্পর্কে সরকার সম্মত হয়েছে। এই বিলটি ৪০০০ কোটি থেকে ৫০০০ কোটি পাউন্ড হতে পারে। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রীর সামনে সময় এসে গেছে, এ বিষয়টি পুরোপুরি খোলাসা করার। প্রকাশ্যে তাকে বলতে হবে, ব্রেক্সিট সম্পন্ন করতে বৃটিশ জনগণের কি পরিমাণ অর্থ তুলে দিতে হচ্ছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের হাতে। ওদিকে গত সপ্তাহে বৃটিশ অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্ট এক প্রতিবেদনে জানায় ব্রেক্সিট সম্পন্ন করতে ৫৫০০ কোটি পাউন্ড বিল পরিশোধ করতে হতে পারে বৃটেনকে। কিংবা দীর্ঘ মেয়াদে এ অঙ্ক দাঁড়াতে পারে ১০০০০ কোটি পাউন্ডে। এমতাবস্থায়, ডিভোর্স বিলের প্রকৃত অঙ্ক ঠিক কতো, তা জানাতে থেরেসা মে’র ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। প্রসঙ্গত, সোমবার তেরেসা মে’ ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জাঁ ক্লদ জাঙ্কারের সঙ্গে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত নীতিমালার সমঝোতা নিয়ে একটি বৈঠকে বসবেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ডিভোর্স বিলের অঙ্ক প্রকাশ করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রী মাইকেল হেসেল্টিন বলেছেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, অনেক মানুষই বৃটেনের একক পরাশক্তি হিসেবে আলাদাভাবে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু এ ধরনের বৈপ্লবিক অবস্থানে যাবার মতো অবস্থা বৃটেনের আদৌ আছে কিনা- তা কিন্তু খুব বেশি মানুষ ভেবে দেখেননি। বাস্তবতা হলো, ব্রেক্সিটের বিলের অর্থ জনগণের পকেট থেকেই যাবে। অতএব, এর আর্থিক অঙ্ক জনগণকে জানাতে হবে। এ প্রসঙ্গে পার্লামেন্টের মন্ত্রী হেইদি অ্যালেন বলেছেন, আমাদের স্বচ্ছতার প্রয়োজন রয়েছে। অতএব, ডিভোর্স বিলের প্রকৃত অঙ্ক জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। এর ফলে কি ধরনের পরিবর্তন আসছে এবং তার প্রভাব কেমন হবে- জানাতে হবে সবকিছু। বিলের অঙ্ক প্রকাশ করা এবং প্রকৃতভাবে তা কতো হতে পারে তা নিরূপণ করার জন্য নিরপেক্ষ ব্যয় পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা নিয়োগ দেয়ার দাবি জানাবে লেবার পার্টি। ডিভোর্স বিলে প্রদেয় অঙ্কের ব্যাপারে সার্বিক সম্মতির জন্য পার্লামেন্টে ভোটের আয়োজন করার দাবি জানানো হবে।