পূর্ব লন্ডনে ছুরিকাঘাতে বাঙালি গৃহবধুর মৃত্যু : স্বামী আটক, অতঃপর জামিনে মুক্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭
দেশ রিপোর্ট: পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত সেন্ট পলসওয়ে এলাকায় এক সন্তানের জননী বাঙালি গৃহবধু ছুরিকাঘাতে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর নাম মিসেস দিলরুবা (৩০)। এ ঘটনায় গৃহবধুর স্বামী মিসবাহুজ্জামানকে পুলিশ আটক করলেও কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জামিনে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। মেট্রোপলিটন পুলিশ সার্ভিস প্রেস ব্যুারোর মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন্স অফিসার পিটি ডেভি সাপ্তাহিক দেশকে জানান, ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে পূর্ব লন্ডনের সেন্ট পলসওয়ে এলাকার বার্জেস স্ট্রিটের একটি ফ্লাটে একজন মহিলা ছুরিকাহত হয়েছেন মর্মে লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসকে জানানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছুরিকাঘাতে মৃত এক মহিলার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৪০ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
তবে একটি বিশ্বস্ত সুত্র সাপ্তাহিক দেশকে জানায়, দিলরুবা ও মিসবাহুজ্জামানের দেশের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের মনিরগাতি গ্রামে। দিলরুবার প্রথম বিবাহ হয় তার বৃটিশ-বাঙালি খালাতো ভাইয়ের সাথে। বৈবাহিক সুত্রেই তিনি লন্ডন আসেন। কিন্তু প্রথম স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় একসময় ডিভোর্স হয়ে যায়। পরবর্তীতে তাঁকে একই গ্রামে ফুফাতো ভাই মিসবাহুজ্জামানের সাথে বিবাহ দেওয়া হয়। বৈবাহিক সুত্রে মিসবাহুজ্জামান বৃটেন আসেন। তাঁদের ঘরে এক সন্তানও জন্ম নেয়। কিন্তু প্রথম বিয়ে বিচ্ছেদের পর থেকেই দিররুবা মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত ছিলেন। এ নিয়ে দ্বিতীয় স্বামীর সংসারেও খুব ভালো যাচ্ছিলো না।
একই সুত্র সাপ্তাহিক দেশকে আরো জানায়, মিসবাহুজ্জামান তাঁকে জানিয়েছেন- ঘটনার দিন সকালে তিনি সন্তানকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। ঘরে ফিরে স্ত্রীকে গলায় ছুরিকাহত অবস্থায় দেখতে পান। এরই মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স তাঁদের ফ্লাটে পৌঁছে দিলরুবাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে পুলিশ লাশের সূরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মর্গে নিয়ে যায়। আর মিসবাহুজ্জামানকে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক করে। তবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে তাঁকে জামিনে ছেড়ে দেয়া হয়। তিনি আরো জানান, মানসিক বিপর্যয়ের কারণে স্ত্রী গলায় ছুরি চালাতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যার সাথে জড়িত থাকার প্রাথমিক কোনো আলামত পায়নি বলে মিসবাহুজ্জামানকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি হত্যা নাকি আত“হত্যা তা এখনও পরিস্কার নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় মাইল এন্ড ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শাহ আলম সাপ্তাহিক দেশকে বলেন, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছেন। এই দম্পতি বার্জেজ স্ট্রিটের ফ্লাটে সম্প্রতি মোভ করেছেন। মাইল এন্ড এলাকায় তারা খুব পরিচিত নন। তিনি মনে করেন, পুলিশের সুষ্ঠু তদন্তে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হবে।