সমাবেশের টুকিটাকি: ইসলাম উদ্দিন আওয়ামী লীগের সমর্থক!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জুন ২০১৮
দেশ রিপোর্ট: প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর পরিচালক যখন বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল পরিচালনা করার জন্য শাডওয়েল মসজিদের ইমাম হাফিজ ইসলাম উদ্দিনের নাম ঘোষণা করেন তখন দর্শকদের মাঝে ফিসফিস শুরু হয়। অনেকে বলতে শোনা যায় ইসলাম উদ্দিন দেশে থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। তিনি দারুল কেরাত মজিদিয়া ফুলতলির শিক্ষকও ছিলেন। তার দেশের বাড়ি বিয়ানীবার পৌরসভার নবাং গ্রামে।
মঞ্চে বসা নিয়ে জল্পনা কল্পনা! বিশাল এই ইফতার ও দোয়া মাহফিলের শুরুতে মঞ্চে বসা নিয়ে নেতাকর্মীদের আগ্রহের কমতি ছিলনা। কারণ মঞ্চে মাত্র ৪টি আসন ছিল। প্রধান অতিথি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিশেষ অতিথি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সভাপত্বিত করবেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালিক আর মাইকে তখন ঘোষণা দিচ্ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ। প্রধান অতিথি বিশেষ অতিথি ও সভাপতির আসনের পর বাকি থাকে একটি আসন। এই আসনে কে বসবেন? সবার মধ্যে কৌতুহল ছিল। অনেকে ধারণা করছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত বিএনপির কোন কেন্দ্রীয় নেতা বসবেন। আবার কেউ কেউ ধারনা করেছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির প্রথম সারির কোন নেতা বসবেন। পরে শূন্য আসনটিতে বসেন পরিচালনার ফাঁকে ফাঁকে যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ।
সুযোগ নিলেন কয়সর আহমদ! কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় ইফতার মাহফিল। এর পর যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ ঘোষণা দেন : সভাপতির বক্তব্যের পর আর কাউকে বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হবে না। শুধুমাত্র প্রধান অতিথি আর বিশেষ অতিথির বক্তব্য শোনা হবে। তাই যুক্তরাজ্য বিএনপির কোন নেতাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। শুধু বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা কিছু নেতার প্রতি। তবে বিশেষ অতিথির (বিএনপি মহাসচিব) বক্তব্যের রেশ ধরে উপস্থাপক কয়সর আহমদ দিয়ে দেন জ¦ালাময়ী এক ভাষণ।
আশাহত নেতাকর্মীরা! ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দলের মহাসচিবের উপস্থিতিতে প্রথম সমাবেশ। তাছাড়া দলের চেয়ারপার্সন কারাগারে। দলীয় নেতাকর্মীরা ধারনা করেছিলেন আন্দোলনের রুপরেখা কিংবা দির্কনিদেশনা দিবেন এই দুই শীর্ষ নেতা। কিন্তু দুই নেতার বক্তব্যে আকািিখত বিষয়টি অনুপস্থিত ছিল। অনেকে মনে করছেন কৌশলগত কারণে হয়তো তাঁরা এই বিষয়ে বক্তব্য রাখেননি। হয়তোবা দুই নেতার মধ্যে বিষয়টি সীমাবদ্ধ রাখার কৌশল ছিল এটি। তবে নেতাকর্মীরা হতাশ হয়েছেন নতুন কোন সিদ্ধান্ত না পাওয়ায়।
সাংবাদিকদের উপস্থিতি ছিল কম! বিশাল এই ইফতার সমাবেশে সাংবাদিকদের উপস্থিতি ছিল একেবারে কম। অনেক সাংবাদিকই দাওয়াত পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। এক সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, বিএনপি এখন বিরোধীদলে আছে। দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার। গণমাধ্যমই হচ্ছে বিরোধীদলের সুখ-দুঃখ বলার একমাত্র জায়গায়। এমতাবস্থায় বিএনপি নেতাদের নিজেদের স্বার্থেই মিডিয়াকর্মীদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখার কথা ছিলো। কিন্তু অবস্থা বিপরীত। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও সেক্রেটারি লন্ডনের সাংবাদিকদের চিনেনই না। সরকার দলের ইফতার মাহফিলসহ যেকোনো বড় অনুষ্ঠানে যেভাবে সাংবাদিকদের গুরুত্বসহ আমন্ত্রণ জানানো বিএনপির ক্ষেত্রে তা একেবারেই অনুপস্থিত। যুক্তরাজ্য বিএনপির সেক্রেটারির সাংবাদিকদেরকে সরাসরি ফোন করে দাওয়াত দেওয়ার নজির খুবই কম। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেকসহ শীর্ষসারির নেতাদের বড় অনুষ্ঠানেও সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয় চতুর্থসারির কোনো কর্মীকে দিয়ে। তাও হাতেগোনা কজন সাংবাদিককে। এতে মিডিয়া কাভারেজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বিএনপি।
ইফতারে সমাবেশে সাংবাদিকদের জন্য সংরক্ষিত টেবিলে দলীয় নেতাকর্মীরা বসে পড়েন। অনেক সাংবাদিকই বসার জায়গা পাননি। অবশেষে যুক্তরাজ্য বিএনপির এক নেতা সাংবাদিকদের বসার ব্যবস্থা করে দেন।