সিলেট সিটি নির্বাচনের বাকি মাত্র ৯ দিন: আরিফুলের পুঁজি ‘উন্নয়ন’, কামরানের ভরসা ‘নৌকা’
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুলাই ২০১৮
সিলেট প্রতিনিধি, ২০ জুলাই : আর মাত্র ৯ দিন বাকি। আগামী ৩০ জুলাই সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনের দিন তারিখ যত ঘনিয়ে আসছে সিলেট মহানগরী প্রচারণামুখর হয়ে উঠছে। মেয়র প্রার্থীরা রাতের ঘুম হারাম করে চষে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এবারে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে নির্বাচনের মাঠে দুই প্রার্থীকে নিয়ে আলোচনায় নগরবাসী। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকার মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সদ্য সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে ঘিরেই চলছে সব হিসাব-নিকাশ। দুই প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে নগরের অলিগলি। নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে কর্মী-সমর্থকরাও বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে ভোট চাইতে। দুই প্রার্থীর মধ্যে কে এগিয়ে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। নগরবাসী মনে করছে, আরিফুলের উন্নয়ন আর কামরানের নৌকা প্রতীকই জয়-পরাজয়ে বড় ভূমিকা রাখবে। নগরের রাস্তা প্রশস্তকরণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণসহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো এগিয়ে রাখছে আরিফকে। আবার সরকারের সামগ্রিক উন্নয়ন ও নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করায় এবার বাড়তি সুবিধা পাবেন কামরান। একদিকে উন্নয়ন, অন্যদিকে প্রতীক, এ দুইয়ে জয়-পরাজয়ের হিসাব কষছে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটাররা।
নগরের সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের শুরু থেকেই টানা দুইবারের মেয়র ছিলেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। জনপ্রিয়তা ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে তাঁর আলাদা সুনাম থাকলেও নগরীর উন্নয়নে ছিলেন পিছিয়ে। মানুষের চাহিদার ক্ষেত্রে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেননি। যার কারণেই নগরবাসী ২০১৩ সালে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল কামরানের দিক থেকে। আস্থা রেখেছিল বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হকে। ৩৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছিলেন আরিফ। সেই নির্বাচনে আরিফুল হক বিজয়ী হওয়ার পর সিলেট-১ আসনের এমপি ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের আশীর্বাদ নিয়ে নগরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন। নগরের অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা, যানজট ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা, রাস্তা প্রশস্তকরণ, খাল ও ছড়া দখলমুক্ত করাসহ বেশ কিছু উন্নয়নকাজ করেন আরিফুল হক। নগরবাসীর ভোগান্তি দূরীকরণে করা এসব দৃশ্যমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ভোটের মাঠে আরিফের পক্ষে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ব্যক্তি জনপ্রিয়তা কামরানের ভোটে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সারা দেশের মতো সিলেটের ভোটের মাঠে নৌকার জনপ্রিয়তা থাকায় এর সুফল পেতে পারেন মেয়র প্রার্থী কামরান। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের একক প্রার্থিতা থাকায় এবং ২০ দলীয় জোটে তিন প্রার্থী হওয়ায় কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাবেন কামরান। নগরবাসী মনে করছে, আরিফুলের উন্নয়ন এবং কামরানের নৌকা প্রতীকই জয়-পরাজয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার মেয়র পদে লড়ছেন সাতজন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং সংসদের বাইরে থাকা সবচেয়ে বড় দল বিএনপির প্রার্থী ছাড়াও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম, নাগরিক ফোরামের ব্যানারে জামায়াতে ইসলামীর মহানগর আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিপিবি-বাসদের প্রার্থী আবু জাফর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ডা. মুয়াজ্জেম হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ এহসানুল হক তাহের।