‘ওসমানীর পরিচয় বিকৃতকারীরা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে’
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ অক্টোবর ২০১৮
লন্ডন, ৫ অক্টোবর : মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর জন্মশতবার্ষিকী পালন উপলক্ষে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রবিবার পূর্ব লন্ডনের ভ্যালেন্স রোডস্থ ওসমানী সেন্টারে এক সেমিনার, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, স্মরনিকা প্রকাশ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাজ্যস্থ বঙ্গবীর জেনারেল এমএজি ওসমানী জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদযাপন কমিটির আহবায়ক কমিউনিটি নেতা আলহাজ্ব কবির উদ্দিন। আহবায়ক কমিটির কো-কনভেনার কে এম আবু তাহের চৌধুরী ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ গোলাম রব্বানীর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য মকসুদ ইবনে আজিজ লামা, জিএসসির পেট্রন ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. হাসনাত এম হোসেইন এমবিই, প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও প্রবীণ কমিউনিটি নেতা আলহাজ্ব মুহাম্মদ আলী ইসমাইল, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি মেয়র অহিদ আহমদ, বঙ্গবীর ওসমানী ট্রস্টের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম খান, উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা শাহ আবিদ আলী, নিউহ্যাম কাউন্সিলের ডেপুটি স্পীকার ব্যারিস্টার নাজির আহমদ, গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল ইউকের চেয়ারপার্সন ব্যারিস্টার আতাউর রহমান, বৃটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ডাইরেক্টর জেনারেল সাইদুর রহমান রেনু জেপি ও ইজলিংটন কাউন্সিলের সাবেক মেয়র কাউন্সিলার গোলাম জিলানী চৌধুরী।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উদযাপন কমিটির কো-কনভেনার শেখ মোঃ মফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা এম এ মান্নান, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আব্দুল কাইউম কয়ছর, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আব্দুল মাবুদ, মুক্তিযোদ্ধা মনজ্জির আলী, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ, সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকার সম্পাদক কবি ফরিদ আহমদ রেজা, উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা তোফাজ্জল হোসেইন চৌধুরী, উপদেষ্টা একাউন্টেন্ট ড. মোহাম্মদ নূরুল আলম, আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইছবাহ উদ্দিন, শিক্ষক ও রাজনীতিবিদ মোঃ মুজিবুর রহমান, উপদেষ্টা ইফতেখার হোসেইন চৌধুরী, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আলাউদ্দিন, যুগ্ম সদস্য সচিব খান জামাল নূরুল ইসলাম, উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাসুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহমুদুল হক, ক্যাপটেন (অবঃ) মইন উদ্দিন আহমদ, নেছার আলী শমসু, মশিউর রহমান মশনু, মাসুদ আহমদ, ডাঃ মাহমুদুর রহমান মান্না, অর্থ সচিব সৈয়দ সুহেল আহমদ, প্রচার সচিব সাংবাদিক রহমত আলী, যুগ্ম প্রচার সচিব সাংবাদিক সৈয়দ আব্দুল কাদির, নূরুল ইসলাম এমবিই, আইনজীবী শামীম চৌধুরী, কমিউনিটি সংগঠক মিসেস ঝরনা চৌধুরী, সুফি সুহেল আহমদ প্রমুখ।
সভায় বঙ্গবীর ওসমানী স্মরণে কবিতা আবৃত্তি করেন বার্মিংহাম থেকে আগত কবি মুফিদুল গনি মাহতাব, কবি শেখ শামসুল ইসলাম, কবি নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক রহমত আলী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ আব্দুল আহাদ ও দোয়া পরিচালনা করেন বায়তুল আমান মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আব্দুল মালিক।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবীর জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর জীবন ও কর্ম ভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শন এবং ‘হৃদয়ে সর্বাধিনায়ক’ শীর্ষক একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হয়। সভায় সকল মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের গোলাপ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা মকসুদ ইবনে আজিজ লামা বলেন যে, মুজিবনগর সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এম এ জি ওসমানীই হচ্ছেন একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক। যারা ইতিহাস বিকৃতি করবে তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়েই নিক্ষিপ্ত হবে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ওসমানী সাহেব আল্লাহর মেহেরবানীতে আমার জীবন রক্ষার জন্য সহযোগিতা করেছিলেন।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, ওসমানী ছিলেন সৎ, নির্লোভ, সময়ের প্রতি নিষ্ঠাবান, সংসদীয় গণতন্ত্রের অনুসারী, ধর্মপ্রাণ ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিক। তাঁর রনকৌশল ও অসাধারণ নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী মাত্র নয় মাসে বাংলাদেশ স্বাধীন করতে পেরেছিল। বক্তারা জেনারেল ওসমানীর জীবনী বাংলাদেশের সকল পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করণ, রাষ্ট্রীয়ভাবে ওসমানীর জন্ম মৃত্যুবার্ষিকী পালন ও ওসমানীর নামে সামরিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
সভায় বৃটেনে নতুন প্রজন্মদের মধ্যে জেনারেল ওসমানীর পরিচিতি তুলে ধরার জন্য প্রতি বছর আলোচনা সভার আয়োজন ও ইংরেজী ভাষায় পুস্তিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভার সভাপতি উদযাপন পরিষদের সকল সদস্যবৃন্দ ও উপস্থিত সর্বস্তরের কমিউনিটি নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। সভা শেষে শিরনী বিতরণ করা হয়।