শাহপরান মাজারের খাদেমদের বিলাসী জীবন!
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ নভেম্বর ২০১৯
সিলেট প্রতিনিধি : সিলেটে হযরত শাহপরান (রা) এর মাজারের নজরানার কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে ২৯ খাদেমের বিলাসী জীবন চলছে। দীর্ঘদিন ধরে বর্তমান মাজার কমিটি মামলার পর মামলা করে বছরে প্রায় ৬ কোটি টাকা নিজেরাই ভাগ বণ্টন করেছেন। ১১ বার ওয়াকফ প্রসাশন কমিটির বিরুদ্ধে অর্থ আত“সাত ও অনিময়ের অভিযোগে প্রতিবেদন দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কুট-কৌশলে খাদেমরা মাজার কমিটিকে নিজেদের দখলে রেখেছেন। ভক্তগনদের কাছ থেকে প্রাপ্ত বিপুল পরিমান অর্থ মাজারের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করছেন না। বিগত বিএনপি ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই মাজারের যে উন্নয়ন হয়েছে তা চোখে পড়ার মত। খাদেমরা মাজারের টাকা দিয়ে গড়ে তুলেছেন সুরম্য অট্টালিকা, হাঁকাচ্ছেন দামি ব্যান্ডের গাড়ি, তাদের সন্তানরাও বিদেশে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে।
১৯৯৬ সালে প্রয়াত স্পিকার আলহাজ হুমায়ূন রশিদ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে পুরাতন মসজিদ ভেঙে নতুন মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। ২০০৫ সালে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের উদ্যোগে মাজারের গদি ঘর, পুকুরের গার্ড ওয়াল, মহিলা এবাদত খানা, মোতওয়াল্লীর অফিস, ইমাম মোয়াজ্জিন ও অতিথিবৃন্দের জন্য তিনতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ, অযুখানা এবং মসজিদের সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হয়। এছাড়াও বর্তমান সরকারের আমলে মাজারের সৌন্দর্য বর্ধন, রাস্তা সংস্কার, বৈদ্যুতিক তার, খুঁটি, নিজস্ব ট্রান্সফরমার স্থাপন, আলোকসজ্জাসহ নতুন অযুখানা ও টয়লেট নির্মাণ এবং অন্যান্য সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হয়।
শাহপরান মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা মাহতাব উদ্দিনের উদ্যোগে সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকে অনুদান নিয়ে জরাজীর্ণ মাদ্রাসা ভেঙ্গে বর্তমান সুসজ্জিত তিনতলা মাদ্রাসা ভবন ও এতিমখানা নির্মাণ করেন। মাদ্রাসার যাবতীয় খরচ, এতিম ছাত্রদের ভরন পোষন এমনকি শিক্ষকদের বেতন ভাতাদি তিনি এলাকার বিত্তবান ও সাধারণ জনগণের কাছ থেকে নিজ উদ্যেগে সংগ্রহ করে এই ব্যয়ভার বহন করছেন।
মাজারের মোতওয়াল্লী মামুনুর রশিদের মামা হাফিজ আব্দুল হান্নান মাদ্রাসার মোহতামিম হওয়ার কারনে ওয়াকফের অডিট থেকে রক্ষা পেতে বেতন রেজিস্টারে প্রতিমাসে শিক্ষকদের স্বাক্ষর করিয়ে নেন। অথচ মাদ্রাসার ও এতিমখানার কোন খরচ মাজারের কমিটি থেকে দেয়া হয় না। চাপের মুখে অসহায় শিক্ষকরা স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন।
২০১০ সালের ১৪ ডিসেম্বর স্থানীয় বাসিন্দা খলিল আহমদ ওয়াকফ এস্টটের কাছ থেকে স্থায়ী দোকান বরাদ্দের আবেদন করলে ওয়াকফ কর্তৃপক্ষ তদন্তের মাধ্যমে একটি মাত্র দোকানের বৈধতা দেন, যা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে। অথচ বর্তমানে মাজার কমপ্লেক্সে পঞ্চাশের অধিক দোকান রয়েছে যা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে মোতওয়াল্লী ও খাদেমরা ভোগ করছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী অবৈধ মাজার কমিটি থেকে এদের বিতাড়িত করে নতুন কমিটি গঠনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।