মিনা ট্রাজেডি : ৪৫ দিনের মধ্যে হাজিদের মৃতদেহ ফিরছে দেশে
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
সৌদি আরবে হজ করতে গিয়ে পদদলনে নিহত বাংলাদেশি হাজিদের মরদেহ হস্তান্তর, দাফন ও ক্ষতিপূরণ ৪৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. বোরহানউদ্দিন। বুধবার দুপুরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। বোরহানউদ্দিন জানান, সৌদি আরবে নিহত বাংলাদেশি হাজিদের মরদেহ হস্তান্তর, দাফন ও ক্ষতিপূরণসহ যাবতীয় কাজ ৪৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।
এখন পর্যন্ত ২৬ জন হাজি নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৩ জনের পরিচয় জানা গেছে। তিনজনের মরদেহ সৌদি আরবে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনো ৫২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর মিনায় শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর ছুঁড়তে যাওয়ার সময় পদদলনে নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যে হাজার ছাড়িয়েছে বলে দাবি করেছে ইরানের বার্তা সংস্থা। হজ পালনকালে ২৫ বছরের মধ্যে এটি ভয়াবহতম দুর্ঘটনা।
এদিকে, দীর্ঘদিন পর দুই মাসের ছুটিতে এসে লাগেজের খোঁজেই চলে যাচ্ছে দিন। আর এসব হচ্ছে সৌদি এয়ারলাইন্সের অব্যবস্থাপনার কারণে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী বেশকয়েকজন তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। নোয়াখানীর নুর হোসাইন বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর সৌদিয়ার এসভি৩৮১৬ ফ্লাইটে নির্ধারিত সময়ের ৫ ঘণ্টা বিলম্বে রিয়াদ থেকে ঢাকায় আসতে পারলেও বুকিং দেয়া মালামাল পাইনি। বিমানবন্দরে দায়িত্বপালনরত কর্মকর্তাদের কাছে তাৎক্ষণিক অভিযোগ করা হলে তারা দ্রুত বিষয়টি জানাবেন বললেও আজ এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও কিছুই জানানো হয়নি। অল্প ছুটির মূল্যবান সময় নস্ট করে এর মধ্যে ৩ দিন এয়ারপোর্টে গিয়েও কোন ফল হয়নি বলেও জানান নুর হোসাইন।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর সৌদিয়ার এসভি৩৮৮২ ফ্লাইটে রিয়াদ থেকে ঢাকায় আসা নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের ফ্লাইটের শতাধিক যাত্রীর মালামাল আসেনি। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার এয়ারপোর্টে এসে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও মালামালের কোন হদিস পাইনি।গত কয়েকদিন এয়ারপোর্ট ঘুরে দেখা গেছে, সৌদিয়ার মালের স্তুপ হয়ে আছে বেল্টের পাশের ফাঁকা জায়গায়। এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে মনিটরিং না করার কারণে সেখানে তৈরি হয়েছে বিশৃংখল পরিবেশ।প্রবাসীদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে বিমানবন্দরে কর্মরত সৌদিয়ার একজন কর্মকর্তা বলেন, সৌদি আরবে বর্তমানে আমাদের যাত্রীদের প্রায় ২০ কন্টেইনার মালামাল আছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ফ্লাইটে মালগুলো চলে এলে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীর অদূরে মিনায় গত বৃহস্পতিবার হজের আনুষ্ঠানিকতা চলাকালে পদপিষ্ট হয়ে ৭৬৯ জন হাজি নিহত হন। আহত হন ৯৩৪ জন হাজি। হতাহত হাজিদের এই সংখ্যা সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এই সংখ্যা নিয়ে অনেকের সংশয় রয়েছে।
মিনা দুর্ঘটনায় হতাহত হাজিদের সবার মরদেহের ছবি এখনো প্রকাশ করেনি সৌদি কর্তৃপক্ষ। নিহত হাজিদের শনাক্ত করতে সবার ছবি ও বিস্তারিত তথ্য খুব শিগগির প্রকাশ করার কথা বলা হয়েছে।