সালাউদ্দিনের ৫ পাকিস্তানি সাক্ষীর বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ অক্টোবর ২০১৫
যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষের ৫ পাকিস্তানি সাক্ষীর বাংলাদেশে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানের পত্রিকা এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১০ সালে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদ- দিয়েছে একটি ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির রায়ে বলেছিলেন, আমরা সর্বসম্মতভাবে একমত হয়েছি যে মানবজাতির সামষ্টিক বিবেককে কাঁপিয়ে দেয়ার মতো অপরাধ সংঘটনের দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাপ্য অভিযুক্ত ব্যক্তির (সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী)।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ৮ জনকে নিজের পক্ষে সাফাই সাক্ষী হিসেবে বর্ণনা করেছেন সালাউদ্দিন কাদের। এদের মধ্যে পাঁচ জন পাকিস্তানি নাগরিক। এরা হলেন, পাকিস্তানের তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিয়াঁ মুহাম্মদ সুমরো, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ইসহাক খান খাকওয়ানি, মুনীব আরজুমান্দ খান, ডন মিডিয়া গ্রুপের চেয়ারপারসন আম্বার হারুন সায়গল ও রিয়াজ আহমেদ। এ সাক্ষীরা নিজেদের হলফনামা পাঠানোর পর, ট্রাইব্যুনাল মিয়াঁ মুহাম্মদ সুমরো ব্যতীত বাকিদের স্বাক্ষ্য অগ্রাহ্য ও প্রত্যাখ্যান করেন। এছাড়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে চ্যালেঞ্জ জানালে সেখানেও হলফনামা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
খবরে বলা হয়েছে, একই সময়ে বাংলাদেশ সরকারও এ পাঁচ পাকিস্তানির বাংলাদেশে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অভিবাসন পুলিশে’র কাছে নাম ও ছবি সংযুক্ত করে লেখা এক চিঠিতে এ পাঁচ পাকিস্তানিকে কালো তালিকাভুক্ত করতে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তবে আন্তর্জাতিক এ সংস্থা বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। পাঁচ সাফাই সাক্ষীর অন্যতম সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ইসহাক খান খাকওয়ানি বলেন, ট্রাইব্যুনাল তাদের সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ না করায়, তারা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশ সরকার এবার তাদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমরা সব ফোরামে আমাদের অংশগ্রহনের ওপর বাংলাদেশ সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সাক্ষী অনুমোদন না দেয়ার ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের যুক্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
প্রসঙ্গত, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বিরোধী দল বিএনপির অন্যতম সদস্য যাকে ২ বছর আগে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও বিরোধী দল বিএনপি বলে আসছে, ২৪ জনকে বিভিন্ন মামলায় সাজা দেয়া এ ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে গঠন করা হয়নি। অনেক সমালোচক এ ট্রাইব্যুনালের মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছেন।