টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নতুন স্পিকার সাবিনা আক্তার, আয়াস মিয়া ডেপুটি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মে ২০১৭
০ কেবিনেটে রদবদল : শিরিয়া খাতুনের প্রস্থান, আব্দুল মুকিত চুনু ও আমিনা আলীর প্রবেশ
০ ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে গেলেন আমন্ত্রিতদের একাংশ
লন্ডন, ১৯ মে:
কাউন্সিলার সাবিনা আক্তার টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নতুন স্পিকার নিযুক্ত হয়েছেন। টাওয়ার হ্যামলেটসে প্রথম বাঙালি মহিলা হিসাবে তিনি এই দায়িত্ব লাভ করলেন। গত টার্মে তিনি ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। একই সাথে নতুন ডেপুটি স্পিকার হয়েছেন কাউন্সিলার আয়াস মিয়া। আয়াস মিয়া ইতিপূর্বে এনভায়রনমেন্ট বিষয়ক কেবিনেট মেম্বার ছিলেন। তাঁরা দুজন ২০১৭/১৮ মিউনিসিপাল বছরে এই দায়িত্ব পালন করবেন।
গত ১৭ মে, বুধবার রাতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের এজিএমে তাঁরা নির্বাচিত হন। এজিএমে নির্বাহী মেয়র জন বিগস এই দুই পদে তাদের নাম প্রস্তাব করেন। মেয়রের প্রস্তাবটি সমর্থন করেন ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার সিরাজুল ইসলাম। তাঁদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
মেয়রের কেবিনেটে রদবদল: এদিকে মেয়র জন বিগসের কেবিনেটেও রদবদল করা হয়েছে। কেবিনেটে নতুন করে যোগ হয়েছেন কাউন্সিলার আব্দুল মুকিত চুনু এমবিই এবং কাউন্সিলার আমিনা আলী। আব্দুল মুকিত চুনুকে কালচার এন্ড ইয়ুথ ও আমিনা আলীকে এনভায়রনমেন্ট বিষয়ক কেবিনেট মেম্বারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর আগে কালচারাল বিষয়ক লিড মেম্বার ছিলেন কাউন্সিলার আসমা বেগম। আসমা বেগমকে দেয়া হয়েছে কমিউনিটি সেইফটি বিষয়ক কেবিনেট মেম্বারের দায়িত্ব।
অন্যদিকে ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার র্যাচেল সন্ডার্সের দায়িত্ব পরিবর্তন হয়েছে। তার নতুন দায়িত্ব হচ্চেছ হেলথ এন্ড এডাব্ব সার্ভিস। সোমালী টাস্কফোর্স বাস্তবায়নও তার অধীনে থাকবে। তিনি এতদিন এডুকেশন এন্ড চিলড্রেন সার্ভিসের দায়িত্বে ছিলেন। অপরদিকে কমিউনিটি সেইফটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার শিরিয়া খাতুনকে কেবিনেট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ফলে এখন ৩ জনের পরিবর্তে ২ জন ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করবেন। স্ট্যাটিটিউরি ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার সিরাজুল ইসলামের দায়িত্বে কোন পরিবর্তন হয়নি। তিনি হাউজিংয়ের দায়িত্বে বহাল রয়েছেন। ফেইথ কমিউনিটি, ওয়েলফেয়ার রিফর্ম রেসপন্স এবং কমিউনিটি ল্যাংগুয়েজ সার্ভিসের দায়িত্বও তাঁকে দেয়া হয়েছে।
এক নজরে জন বিগসের কেবিনেট: স্ট্যাটিটিউরি ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার সিরাজুল ইসলাম- হাউজিং। ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার র্যাচেল সন্ডার্স- হেলথ এন্ড এডাব্ব সার্ভিস। কাউন্সিলার যশোয়া প্যাক -কেবিনেট মেম্বার ফর ওয়ার্ক এন্ড ইকোনমিক গ্রোথ। কাউন্সিলার আসমা বেগম – কেবিনেট মেম্বার ফর কমিউনিটি সেইফটি। কাউন্সিলার র্যাচেল ব্ল্যাইক – কেবিনেট মেম্বার ফর স্ট্র্যাটেজিক ডেভেলাপমেন্ট এন্ড ওয়েস্ট। কাউন্সিলার এ্যামি হোয়াইটলক গিবস – এডুকেশন এন্ড চিলড্রেন সার্ভিস। কাউন্সিলার ডেভিড এডগার -কেবিনেট মেম্বার ফর রিসোর্সেস। কাউন্সিলার আব্দুল মুকিত চুনু এমবিই- কালচার এন্ড ইয়ুথ। কাউন্সিলার আমিনা আলী-এনভায়রনমেন্ট। এছাড়া মেয়র জন বিগস কাউন্সিলারদের মধ্যে থেকে ২ জনকে তার এডভাইজার পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এরা হলেন কাউন্সিলার জন পিয়ার্স এবং কাউন্সিলার ডেভ চেস্টারটন।
মেয়র জন বিগস নব নিযুক্ত স্পিকার কাউন্সিলার সাবিনা আক্তারকে অভিনন্দন জানিয়ে টাওয়ার হ্যামলেটসে প্রথম বাঙালি মহিলা স্পিকার হিসাবে তার সফলতা কামনা করেন। নবনিযুক্ত স্পিকার কাউন্সিলার সাবিনা আক্তার তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, স্পিকার তথা ফার্স্ট সিটিজেন অব দ্যা বারা হিসাবে দায়িত্ব পালন অবশ্যই সম্মান এবং গৌরবের। আর এজন্য আমি আমার সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানাচ্চিছ আমাকে নির্বাচিত করার জন্য। তিনি বলেন, অপার সম্ভাবনাময় টাওয়ার হ্যামলেটসে মেয়র জন বিগস, আমার সকল সহকর্মী, বাসিন্দা, চ্যারেটি সংস্থা তথা সবার সাথে আমি কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।
ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে গেলেন আমন্ত্রিতদের একাংশ: এদিকে এজিএম অনুষ্ঠানে অধিক-সংখ্যক মানুষকে আমন্ত্রণ জানানোর ফলে আমন্ত্রিত অতিথিদের একটি অংশকে অনুষ্ঠান হলে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে যেতে হয়েছে। রাত ৯টার দিকে মালবেরী প্লেসে পৌঁছে দেখা যায় রিসেপশনে কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের ভীড়। প্রত্যেকেই দাওয়াতপত্র হাতে নিয়ে ভেতরে প্রবেশের অপেক্ষায় গেইটে দাঁড়িয়ে আছেন। কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্চেছ না। কারণ জানতে চাইলে কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা বলেন, অনুষ্ঠান হলে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্চেছ না। এখন হল থেকে কিছু মানুষ বেরিয়ে এলে আরো কিছু সংখ্যককে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হবে। তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভেতরে ঢুকতে না পেরে অনেককে ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে। এদের মধ্যে লেবার পার্টির অনেক সদস্য, সাবেক কাউন্সিলার এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণও ছিলেন। আমিন্ত্রত হয়ে মালবেরী প্লেসে যাওয়া যুবনেতা জামাল খান এ প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমন্ত্রণ দিয়ে এনে ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়া খুবই বেমানান। অন্য একজন অতিথি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কাউন্সিলের উচিত ছিলো অনুষ্ঠান হলের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্চেছ, কোনো ধরনের বাছ-বিচার ছাড়াই অবাধে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।