কেনিংটাউনে জেএমজি কার্গোর এক্সপ্রেস সেন্টারের উদ্বোধন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ মে ২০১৭
লন্ডন, ২৬ মে: বৃটেনসহ ইউরোপের বাংলাদেশী কমিউনিটির সর্ববৃহৎ কার্গো প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান জেএমজি এয়ার কার্গো এবার বৃহত্তর পরিসরে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে পূর্ব লন্ডনের কেনিং টাউনে এক্সপ্রেস সেন্টার উদ্বোধন করেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ফিতা কেটে এর উদ্বোধন করেন লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর শরীফা খান।
সাংবাদিক এনাম চৌধুরীর পরিচালনায় ও জেএমজি কার্গোর চেয়ারম্যান মনির আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের ইউকে কান্ট্রি ম্যানেজার মোঃ শফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসের স্পিকার সাবিনা আক্তার, ডেপুটি স্পিকার কাউন্সিলর আয়াস মিয়া, সাবেক মেয়র মতিনুজ্জামান, সাবেক মেয়র আব্দুল আজিজ সর্দার, ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রিজের সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহগীর বখত ফারুক, ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্স ডিরেক্টর আবুল হায়াত নুরুজ্জামান, এটিএন বাংলা ইউকে’র প্রধান নির্বাহী হাফিজ আলম বখশ, এনটিভি ইউরোপের পরিচালক মোস্তফা সরোয়ার বাবু, নিউহ্যাম এর কাউন্সির আয়েশা চৌধুরী ও একাউন্টেট মাহবুব মোর্শেদ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেএমজি কার্গোর হিথ্রো শাখার পরিচালক শামসাদুর রহমান রাহিন। জেএমজি কার্গোর এক্সপ্রেস সেন্টারের উদ্বোধক লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের কর্মাশিয়াল কাউন্সিলর শরীফা খান বলেন, বৃটেনের বাঙালি কমিউনিটির ব্যবসা বাণিজ্যে অহংকার করার মতোই একটি নাম জেএমজি কার্গো। এতোদিন বৃটেনের বাংলাদেশীরা শুধুমাত্র রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তবে, এখন সেই গতানুগতিক ধারা ভেঙে জেএমজি কার্গোর প্রতিষ্ঠাতা মনির আহমেদের মতো উদ্যোক্তারা নতুন নতুন সম্ভাবনাময়ী সেক্টরে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটাচ্ছেন। যা বৃটেনের বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য একটি ইতিবাচক দিক।
প্রধান অতিথি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ইউকে কান্ট্রি ম্যানেজার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, জেএমজি কার্গোর সাথে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে একটি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এই সম্পর্ক কখনো ছিন্ন হবে না। জেএমজি কার্গো বিমানের সাথে আজীবন কাজ করে যাবে বলে আমি আশাবাদী। বিমানের মতোই এই জেএমজি কার্গো এখন আপনাদের তথা এই কমিউনিটির নিজস্ব সম্পদ। বিমানের এই মার্কেট সৃষ্টিতে জেএমজি কার্গো দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও চেষ্টা করে যাবে। জেএমজি কার্গো দেশে মালামাল প্রেরণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিরের স্পিকার সাবিনা আক্তার বলেন, জেএমজি কার্গোর মতো একটি সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যাত্রা টাওয়ার হ্যামলেটস থেকে শুরু হয়েছিলো বলে আমি সত্যিই গর্বিত। এটি কমিউনিটির কর্মসংস্থানের পাশাপাশি সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সভাপতির বক্তব্যে জেএমজি কার্গোর চেয়ারম্যান পরিচালক মনির আহমেদ বলেন, জেএমজি কার্গোর আজকের এই সফল অবস্থানের আসার কৃতীত্ব একা আমাদের নয়, এটি আমাদের সকল এজেন্ট, গ্রাহক ও সর্বোপরি এই বাংলাদেশী কমিউনিটির। তিনি বলেন, আজ থেকে ১৫ বছর আগে শুধুমাত্র টেবিল চেয়ার নিয়ে যাত্রা শুরু করা জেএমজি কার্গোর বর্তমান অবস্থা আসার পেছনে বিমানের পাশাপাশি কমিউনিটি ও মিডিয়ার সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা আমাকে স্বীকার করতেই হবে। আমি চাই সবসময়ই আপনারা এভাবে আমার পাশে থাকবেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ বাংলাদেশী হুজুহুর প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল করিম গনি, জনমত এর বার্তা সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন, ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ কোম্পানীর পরিচালক ইকরাম ফরায়েজী, নিউহ্যাম ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সভাপতি লাকী মিয়া, দর্পণ সম্পাদক রহমত আলী, টাওয়ার হ্যামেলটস এর কাউন্সিলর শাহ আলম, রয়েল রিজেন্সী এর পরিচালক আব্দুল বারী, ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রিজের মেম্বারশীপ সেক্রেটারি সরকুম আহমেদ খালেদ, ডিরেক্টর এমদাদ আহমেদ, ডিরেক্টর গোলাম কিবরিয়া ওয়েস, সোনার বাংলা ট্রাভেলস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক লুৎফুর রহমান সায়াদ, জেএমজি কার্গোর সাবেক ব্যবস্থাপক কামরুল হাসান প্রমূখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন জেএমজি কার্গোর প্রধান নির্বাহী দিলারা খাতুন জেনী ও ব্যবস্থাপক মাহমুদুল হাসান দুলাল।
উল্লেখ্য, সিলেটে তরুন বয়সে কার্গো এবং কাস্টমস ক্লিয়ারিং ব্যবসায় সফলতা অর্জনকারী মনির আহমদ পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসে ১৫ বছর আগে মাত্র ১টি টেবিল নিয়ে স্বল্প পরিসরে জেএমজি কার্গোর যাত্রা শুরু করেন। শুরুতে কিছুদিন বেশ কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে সময় পার করলেও দ্রুত সেবা ও আন্তরিক ব্যবহারে সফলতার দিকে এগিয়ে যান তিনি। বৃটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটিতে কার্গো প্রেরণের মতো সেবাকে একটি উন্নত ও সম্ভাবনাময় ব্যবসায় পরিণত করেন মনির আহমদ, যা আজ একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে। শুরুতে এক সময় যেখানে মাসে বৃটেন থেকে বাংলাদেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে মাত্র ৫শ কেজি কার্গো প্রেরণ হতো, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড় শত টন কেজির মতো। বর্তমানে বৃটেনসহ ইউরোপে জেএমজি কার্গো তিন শতাধিক এজেন্ট রয়েছে, যেখানে অর্ধ শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বৃটেনের একমাত্র কার্গো সেলস এজেন্টস হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে জেএমজি কার্গো।