মির্জা ফখরুলের ওপর সশস্ত্র হামলা, নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড়
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০১৭
দেশ ডেস্ক : ভয়াবহ পাহাড়ধসে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে রাঙ্গামাটি যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে মির্জা ফখরুলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা আহত হন। হামলার ঘটনায় রাজধানীতে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করেছে বিএনপি। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেছেন, এ ন্যক্কারজনক হামলার পরিণতি শুভ হবে না। এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
২০ জুন সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়া ইছাখালি এলাকায় ৩০-৪০ জনের সশস্ত্র এক দল দুর্বৃত্ত এই হামলা চালায়। হামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মীর ফাওয়াজ হোসেন শুভ, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বকরসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে বহরের সাতটি গাড়ি। ফলে রাঙ্গামাটি যেতে পারেনি বিএনপির প্রতিনিধি দল। রাঙ্গুনিয়া থেকে ফিরে যান বিএনপি নেতারা। পরে তারা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিকেলে ঢাকায় চলে যান। এই ঘটনার জন্য সরকার দলীয় ক্যাডারদের দায়ী করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাঙ্গুনিয়ার এমপি ড. হাছান মাহমুদের অনুসারী সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে।
যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত:
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল সকালে পাহাড়ধসে রাঙ্গামাটির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণের জন্য যাচ্ছিলেন। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক দিয়ে ১৫/১৬টি গাড়ির একটি বহর নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। গাড়িবহর রাঙ্গুনিয়ার উপজেলা সদর ইছাখালীতে পৌঁছালে ৩০-৪০ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী গাড়ির বহরের সামনে লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়। গাড়ি বহরের নেতৃবৃন্দ কিছু বুঝে উঠার আগেই তাদের গাড়ি ও তাদের ওপর হামলা করে। হামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাত কেটে যায় এবং আহত হন। এ ছাড়াও আহত হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার ফাওয়াদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমান শামীম, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। হামলার পর গাড়ির বহর ও নেতৃবৃন্দ রাঙ্গামাটি যেতে না পেরে আবার চট্টগ্রামে চলে যান। ঘটনা তদন্ত হচ্ছে-পুলিশ সুপার: মির্জা ফখরুলের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনার তদন্ত হচ্ছে জানিয়ে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, কাজটি ভালো হয়নি। যারাই করুক। আমরা এটা সমর্থন করি না। হামলা কেন করা হবে? এটা অন্যায় করা হয়েছে। তিনি বলেন, যতটুক খবর নিয়েছি বিএনপি নেতারা মূল সড়ক দিয়ে যাননি। বিষয়টি পুলিশের নজর এড়িয়ে গেছে। ফলে রাস্তায় কোনো পুলিশ না থাকায় কেউ এটা করে ফেলেছে। পুলিশ জানলে অবশ্যই তাদের নিরাপত্তা দিতো।
যুক্তরাজ্য বিএনপির নিন্দা ও প্রতিবাদ:
পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ দিতে রাঙ্গামাটি যাবার পথে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালি এলাকায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে বহনকারী ত্রাণবাহী গাড়িবহরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাজ্য বিএনপি। গত ১৮ জুন রোববার পূর্ব লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি কার্যালয়ে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, অবৈধ সরকার নিজের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য বিএনপির মহাসচিব ও তাঁর সফরসঙ্গীদের হত্যার উদ্দেশে নিজেদের সন্ত্রাসীবাহিনী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ আক্রমণ করেছে। সরকার চায়না পার্বত্য এলাকায় পাহাড় ধ্বসে মর্মান্তিক ঘটনাটির প্রকৃত অবস্থা দেশের মানুষ জানুক। কারণ অবৈধ প্রধানমন্ত্রী দেশের এই মর্মান্তিক ঘটনাটি জানার পরও তাদের দিকে নজর না দিয়ে বিদেশে বিলাস বহুল আনন্দ ভ্রমণে ছিলেন। বক্তারা বলেন, আওয়ামী বাকশালীরা নিজে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করে না এবং কাউকে সাহায্য করতে দিতেও চায় না। বক্তারা মহাসচিবের উপর হামলার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে যুক্তরাজ্য বিএনপি সর্বদা প্রস্তুত বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন। ।
প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মুজিবুর রহমান মুজিব, মোঃ গোলাম রাব্বানি, গোলাম রাব্বানী সোহেল, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক নসরুল্লাহ খান জুনায়েদ, যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক সহিদুল ইসলাম মামুন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ খান, কামাল উদ্দিন, লন্ডন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবেদ রাজা, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক দেওয়ান মোকাদ্দেম চৌধুরী নিয়াজ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান মাহতাব, সাংগঠনিক সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু, যুব বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হামিদ খান হেভেন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আবু নাসের, সহ-দফতর সম্পাদক সেলিম আহমেদ, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক খিজির আহমেদ, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হোসেন গাজী, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক সরফরাজ আহমদে সরফু, সদস্য টিপু আহমেদ, শাহেদ আহমেদ চৌধুরী, কামাল চৌধুরী, এজে লিমন, হাবিবুর রহমান, আমিনুর রহমান আকরাম, শহীদ মুসা, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিকুল ইসলাম রিবলু, ইস্ট লন্ডন বিএনপির সভাপতি ফখরুল ইসলাম বাদল, সাধারণ সম্পাদক এসএম লিটন, সেন্ট্রাল লন্ডন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ, সিনিয়র সহ সভাপতি সৈয়দ শাহিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, নিউহ্যাম বিএনপির সভাপতি মুস্তাক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক সেবুল মিয়া, সাউথ ইস্ট বিএনপির সভাপতি সালেহ আহমেদ জিলান, লন্ডন মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সস্পাদক খালেদ চৌধুরী, লন্ডন মহানগর বিএনপি নেতা গৌছ খান, তুহিন মোল্লা, আবু তাহের, নজরল ইসলাম মাসুক, সৈয়দ আতাউর রহমান, রবিউল আলম, শফিক মিয়া, ইস্ট লন্ডন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নূর এ আলম সোহেল, বিএনপি নেতা মাওলানা শামিম আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিসবাহ বিএস চৌধুরী, সহ সভাপতি ডালিয়া বিনতে লাকুরিয়া, দপ্তর সম্পাদক রাসেল শাহরিয়ার, শেখ সাদেক আহমেদ, কেন্দ্রীয় জাসাসের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এমাদুর রহমান এমাদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এনামুল হক লিটন, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক সভাপতি রহিম উদ্দিন, যুবদল নেতা আফজাল হোসেন, দেওয়ান আব্দুল বাছিত, আকতার হোসাইন শাহিন, বাবর চৌধুরী, শাহজাহান আহমেদ, নুরুল আলী রিপন, সাহনূর মিয়া, আলকু মিয়া, মোঃ আব্দুস শহীদ, মোজাহিদুল ইসলাম সুমন, সুয়েদুল হাসান, মোশারফ হোসেন, শাকিল আহমেদ, ওমর আলী, রেদওয়ান আহমেদ, নিজামুল হক, মফাজ্জল হোসেন শ্যামল, মফসল আলী, মইনুল ইসলাম, মোঃ শফিউল আলম মুরাদ, হামিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম ও মাহবুবুর রহমান।
মাহিদুর রহমানের প্রতিবাদ:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে বহনকারী ত্রাণবাহী গাড়িবহরে সন্ত্রাসী হামলার তীব নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাহিদুর রহমান। বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিবের উপর হামালা করা মানে গণতন্ত্রের উপর হামলা। দেশের সর্বত্র আজ চলছে অরাজকতা, লুটতরাজ। সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে দলীয় প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ত্রাণবাহী বহরে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। এই সরকার অনির্বাচিত বলেই ভূমিধসে নিহতদের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নেই। যার কারণে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী দেশের এই ক্রান্তিকালে কীভাবে ১৭০ জন লোকের প্রাণহানির জানার পরেও বিলাস বহুল বিদেশ সফর অব্যাহত রেখেছিলেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামসহ পাহাড়ি ধসে ভয়াবহ বিপর্যস্ত এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানান । লন্ডন মহানগর বিএনপির প্রতিবাদ বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ত্রাণ বহরে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে লন্ডন মহানগর বিএনপি’র সভাপতি মোঃ তাজুল ইসলাম, সাধারণ সস্পাদক আবেদ রাজা, সাংগঠনিক সস্পাদক খালেদ চৌধুরী। তারা এক বিবৃতিতে বলেন, রাঙামাটিতে পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরনের উদ্দেশ্যে যাত্রার অভিমূখে রাংগুনিয়ার ইছাখালি বাজারে বিএনপি’র ত্রাণবাহী গাড়ী বহরে হামলা করে বিএনপি মহা সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর উপর নারকীয় হামলা ন্যাক্কারজনক। এ ঘটনার নিন্দার ভাষা নেই।। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি