দৈনিক সিলেটের ডাক’র ডিক্লেয়ারেশন বাতিল করায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০১৭
দেশ ডেস্ক : সিলেটে সর্বাধিক প্রচারিত স্থানীয় দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকার প্রকাশনা অনুমতি বাতিল করায় তা বন্ধ হয়ে গেছে। তিন মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত শিল্পপতি রাগিব আলীর মালিকানাধীন ছিল এই পত্রিকা। ২০ জুন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়ার এক আদেশে পত্রিকাটির ডিক্লেয়ারেশন বাতিল করেন। বিকালে তিনি সাংবাদিকদের প্রকাশনা বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর ফলে আজ থেকে আর প্রকাশিত হচ্ছে না দৈনিক সিলেটের ডাক। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন- সিলেটের ডাক পত্রিকার প্রকাশক রাগিব আলী সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়েছে। প্রকাশক সাজাপ্রাপ্ত হলে পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল হয়ে যায়। ডিক্লারেশন বাতিলের বিষয়টি সিলেটের ডাক পত্রিকার কার্যালয়ে জানানো হয়েছে। রাগিব আলী সিলেটের বিশিষ্ট শিল্পপতি। দেবোত্তর সম্পত্তি বন্দোবস্তের নামে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি মামলার রায়ে গত ২রা ফেব্রুয়ারি রাগিব আলী ও তার ছেলেকে ১৪ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয় আদালত। প্রতারণার আরেক মামলায় গত ৬ এপ্রিল রাগিব আলীর ১৪ বছর, ছেলে আবদুল হাই, জামাতা আবদুল কাদির, মেয়ে রুজিনা কাদির ও নিকটাত্মীয় দেওয়ান মোস্তাক মজিদকে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এদিকে-পরোয়ানা জারির পর পলাতক থাকা অবস্থায় পত্রিকা প্রকাশের কারণে রাগিব আলী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে দায়ের আরেক মামলায় তাদের এক বছর করে কারাদণ্ডও দেয়া হয়েছে।
২০ জুন সন্ধ্যায় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আবদুল হামিদ মানিক জানিয়েছেন- পত্রিকা কর্তৃপক্ষ গতকাল জেলা প্রশাসকের চিঠি পেয়েছেন। তারা এ বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠক করার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান- ইতোমধ্যে পত্রিকার ডিক্লারেশন বর্তমান ইনচার্জ আবদুল হান্নানের নামে দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর নিয়ম মতো একটি আবেদন করা হয়েছে। মধুবন মার্কেট থেকে প্রকাশিত সিলেটের ডাক সিলেটে স্থানীয় দৈনিকগুলোর মধ্যে সর্বাধিক প্রচারিত এবং জনপ্রিয় দৈনিক। রাগিব আলী গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে পত্রিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা চলছিল। এ নিয়ে পত্রিকাটির কর্মীরাও আতঙ্কে ছিলেন। লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ দৈনিক সিলেটের ডাক জেলা প্রশাসন কর্তৃক বন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব। ক্লাব সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ জুবায়ের এক বিবৃতিতে বলেন, প্রকাশক জটিলতার অজুহাতে দৈনিক সিলেটের ডাক-এর মতো একটি জনপ্রিয় দলনিরপেক্ষ পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে দেয়াটা হতাশাজনকই নয়, উদ্বেগজনকও বটে। এসব কারণেই বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দেয়। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ সবধরনের জটিলতা নিরসন করে অবিলম্বে দৈনিক সিলেটের ডাক এর প্রকাশণাকে স্বাভাবিক করতে রাষ্ট্রই উদ্যোগী ভূমিকা নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তাঁরা বলেন, সিলেটের ডাকের ডিক্লারেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ আমরা প্রত্যাশা করছি। আইনের মারপ্যাঁচ নয়, শতাধিক সাংবাদিক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিপনন কর্মীর রুটি রুজির বিষয়টি মানবিকতার দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনায় নেয়ার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার স্বার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দৈনিক সিলেটের ডাক এর দ্রুত পূণঃপ্রকাশে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেবেন বলে বৃটিশ বাংলাদেশী সাংবাদিক ও মিডিয়া কর্মীরা আশা করছেন।