টাওয়ার হ্যামলেটসে অগ্নি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০১৭
টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র জন বিগস বলেছেন, আগুনের হাত থেকে বাসিন্দাদের নিরাপত্তা বিধানে কাউন্সিলের পক্ষে যা যা করা সম্ভব তার সবই করা হচ্চেছ। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ঘর বাড়িকে আগুনের হাত থেকে বাঁচাতে সর্বোচ্চচ সতর্ককতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার লক্ষ্যে উর্ধতন হাউজিং ও সেফটি অফিসারদের সাথে জরুরী সভা শেষে এক বিবৃতিতে তিনি এই কথা বলেন। গত ১৪ জুন কেনজিংটনের গ্রেনফেল টাওয়ারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে তার এই জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে মেয়রের সাথে বৈঠক শেষে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সকল বাড়ি-ঘরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত টাওয়ার হ্যামলেটস হোমস (টিএইচএইচ) এর প্রধান নির্বাহী বাসিন্দাদের লিখিতভাবে আশ্বস্ত করেছেন যে কাউন্সিলের কাছে এখন এক নম্বর অগ্রাধিকার হচ্ছে আগুন তথা বাসিন্দাদের সার্বিক নিরাপত্তা। আগুনের ঝুঁকি থেকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথাও চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে। এই চিঠিতে জানানো হয়েছে যে, গত ৯ মাসে টাওয়ার হ্যামলেটস হোমস এর মোট ৯০০ হাউজিং ব্লকের সবগুলোর অগ্নি ঝুঁকি মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। অভিজ্ঞ অগ্নি ঝুঁকি নিরূপনকারীরা সবগুলো বিহ্বিংয়ের অগ্নি নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেছেন।
এছাড়া অধিকাংশ ফ্ল্যাটে স্মোক এলার্ম লাগানো আছে এবং অনেক ঘরে নতুন অগ্নিরোধক দরোজা (ফ্রন্ট ডোর) লাগানো হয়েছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ আরো ঘরের সামনের দরজাকে অগ্নিরোধক করা হবে। কাউন্সিলের কোন টেনেন্ট যদি তার ঘরে স্মোক এ্যালার্ম না থাকে, তাহলে কোথায় গিয়ে তা সংগ্রহ করতে পারবেন, তাও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ০২০ ৭৩৬৪ ৫০১৫ নাম্বরে ফোন করে স্মোক এ্যালার্ম সম্পর্কে সব তথ্য জানা যাবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া বাসিন্দাদেরকে লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুযায়ি বিভিন্ন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
সেগুলো হচ্ছে- আপনার ঘরের স্মোক এ্যালার্ম কাজ করছে কি না – তা নিশ্চিত করুন। – ঘরের ব্যালকনিকে পরিস্কার ও ঝামেলামূক্ত রাখুন। – সর্বসাধারণের চলাচলের পথে আবর্জনা বা সাইকেল রাখবেন না এবং বের হওয়ার পথে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না। – আপনি যে বিহ্বিংয়ে বসবাস করছেন, তার সকল প্রবেশ নির্গমন পথ সম্পর্কে ভালো ধারনা রাখুন। – যদি আপনি ধুমপায়ী হন, তাহলে দয়া করে কমিউনাল এলাকা অর্থাৎ সর্বসাধারণের চলাচলের স্থানে ধুমপান থেকে বিরত থাকুন। – ঘরের ভিতর ধুমপান করলে সিগারেটের শেষাংশ ভালো করে নিভান এবং সতর্কতা ও নিরাপত্তার সাথে তা ডাস্টবিনে ফেলুন। মেয়র জন বিগস তার বিবৃতিতে গ্রেণফেল টাওয়ার অগ্নিকান্ডে হতাহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে আরো বলেন, বাসিন্দাদের নিরাপত্তা বিধান আমাদের কাছে সর্বোচ্চচ অগ্রাধিকার। গ্রীণফেল টাওয়ার ট্র্যাজেডি থেকে আমরা কী শিক্ষা নিতে পারি সেটা কাউন্সিল অত্যন্ত গভীরভাবে পর্যালোচনা করছে।
তিনি বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটস হোমস গত ৯ মাসে ৯০০ টিএইচএইচ ব্লকের সবগুলোর অগ্নি ঝুঁকি মূল্যায়ন করেছে এবং এই অনুসন্ধানের মাধ্যমে চিহ্নিত ইস্যূগুলো নিয়ে আমরা এখন কাজ করছি। মেয়র আরো বলেন, অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চচ অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কাউন্সিল টিএইচএইচ, অন্যান্য ল্যান্ডলর্ড এবং বাসিন্দাদের সাথে ঘনিষ্টভাবে কাজ করে যাবে। বারার সকল আবাসিক বিহ্বিং, বিশেষ করে উঁচু ভবনগুলো, যেখানে ক্লেডিং লাগানো হয়েছে তা আমরা পর্যালোচনা করছি এবং রেজিস্টার্ড হাউজিং এসোসিয়েশনগুলোকেও অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অনুপ্রাণিত করছি। এই ভয়াবহ ঘটনার প্রেক্ষিতে সর্বস্তরের জনসাধারণকে নিজ নিজ ঘরের অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার জন্যও মেয়র অনুরোধ জানান। মেয়র সবার ঘরের স্মোক এ্যালার্মটি কাজ করছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখার অনুরুধ করেন। মেয়র এব্যাপারে বারার বাসিন্দাদের সহযোগিতা কামনা করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি