বিসিএ’র নতুন কমিটির বর্ণাঢ্য অভিষেক : নবীণ-প্রবীণের নতুন নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুলাই ২০১৭
দেশ ডেস্ক, ১২ জুলাই: বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অভিষিক্ত হলেন বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন ‘বিসিএ’র নবনির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দ। ১১ জুলাই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের অভিজাত রয়েল রিজেন্সি হলে এমপি, মেয়র, কাউন্সিলারসহ ৬ শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে এই অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন- জনাব কামাল ইয়াকুব, অলি খান ও সাইদুর রহমান বিপুল-এর নেতৃত্বে নবগঠিত ১১৫ সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে নবীণ-প্রবীণ নেতৃত্বের সমন্বয় ঘটেছে। এই কমিটি বৃটিশ-বাঙালিদের ঐতিহ্যের স্মারক প্রাচীণতম এই সংগঠনটিকে আরো অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
বক্তারা বলেন, ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এ্যাসোসিয়েশন একটি আমব্রেলা সংগঠন হিসেবে বৃটেনের বহুজাতিক সমাজে পরিচিতি লাভ করেছে। সমগ্র বৃটেনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ১২ হাজার ব্রিটিশ বাংলাদেশী কারি হাউজের প্রতিনিধিত্ব করছে এই সংগঠন। এই সেক্টরে কর্মরত রয়েছে একশ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই খাত থেকে বছরে ট্রানওভার ৪.২ বিলিয়ন পাউন্ড।
বিবিসি রেডিও’র উপস্থাপিকা নাদিয়া আলীর সাবলিল সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল ইয়াকুব। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্টিফেন টিমস এমপি, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কমার্শিয়াল কাউন্সিলার শরীফা খাতুন, চ্যানেল এস-এর চেয়ারম্যান আহমেদুস সামাদ চৌধুরী, বিদায়ী কমিটির প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকার, সেক্রেটারী এম এ মুনিম ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ এমবিই।
স্বাগত বক্তব্যে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল ইয়াকুব বলেন, বিগত কমিটি ছিল একটি সফল কমিটি। পাশা খন্দকার ও এম এ মুনিমের সুযোগ্য নেতৃত্বে বিসিএ নবজীবন লাভ করে, তাদের সাথে কাজ করার আমার সুয়োগ হয়ে। তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সংগঠনটিকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করব। তিনি বলেন বর্তমানে এই সেক্টরে ষ্টাফ সংকট ইমিগ্রেশনসহ রয়েছে নানাবিধ সমস্যা। জাতীয়ভাবে লবিংয়ের মাধ্যমে আমাদের সমস্যাগুলোকে তুলে ধরতে হবে, তিনি বলেন বর্তমানে বিসিএ ১৫টি রিজিওনের মাধ্যমে কাজ করছে, আগামীতে ২০টি রিজিওনাল কমিটি করার পরিকল্পনা আছে তাদের। তিনি তার টিমের পক্ষ থেকে সকলকে ধন্যবাদ জানান সেই সাথে সংগঠনটিকে এগিয়ে নিতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
নবনির্বাচিত সেক্রেটারি জেনারেল অলি খান বক্তব্যের শুরুতে মানচেস্টার, গ্রীনফিল টাওয়ার এবং লন্ডন ব্রীজসহ বৃটেনের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকান্ড এবং সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, নতুন কর্মসংস্থানসহ ক্যাটারারদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিতে কাজ কারার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের, সেই সাথে এই সেক্টরের সমস্যাগুলোকে জাতীয়ভাবে তুলে ধরতে বিভিন্ন সময়ে সেমিনার সিম্পোজিয়ামসহ দক্ষ ষ্টাফ তৈরিতে কাজ করবেন। নবপ্রজন্ম যাতে এই সেক্টরের দিকে আগ্রহী হয় সে লক্ষ্যে কাজ করবেন। তিনি বিগত কমিটির প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ এমবিই, পাশা খন্দকার এবং সেক্রেটারি এম এ মুনিমের প্রশংসা করে বলেন তাদের মতো যোগ্য নেতৃত্বের সাথে আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে, তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিসিএ’র সংকট সমাধানে চেষ্টা করব। তিনি তাদের চলার পথে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
নবনির্বাচিত কমিটির চীফ ট্রেজারার সাইদুর রহমান বিপুল সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে চলার পথে সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, বিসিএ’র সাথে আমার সম্পর্ক আত্মার। এই সংগঠনটির সাথে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সম্পৃক্ত ছিলেন আমার মরহুম পিতা বাতির মিয়া। আমাদের পূর্বপুরুষেরা যে স্বপ্ন নিয়ে বিসিএ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে হলে প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা।
বিসিএ’র বিদায়ী প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকার বলেন, আজ থেকে দশবছর আগে বজলুর রশীদের নেতৃত্বাধীন কমিটিতে সেক্রেটারি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলাম। তিনি তাঁর টানা দশ বছরের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন এই সংগঠনটিকে ঠিকিয়ে রাখতে আমাদের অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হতে হয়েছে। সকলের সহযোগিতায় বাধাবিপত্তি সত্বেও সংগঠনটির অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে পেরেছি। মূলতঃ আমাদের সময়ে এই সংগঠনটি বৃটেনের বহুজাতিক সমাজে ব্রিটিশ বাঙালিদের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তিনি নবনির্বাচিত কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন মোস্তফা কামাল ইয়াকুব একজন সুশিক্ষিত, দক্ষ এবং অভিজ্ঞ মানুষ। তাঁর নেতৃত্বে বিসিএ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে- এটি আমার বিশ্বাস। অলি খান একজন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি। বিসিএকে এগিয়ে নিতে নিরলসভাবে কাজ করেন তিনি। কামাল ইয়াকুব এবং অলি খানের নেতৃত্বে বিসিএ আরো এগিয়ে যাবে এটি আমার বিশ্বাস।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ এমবিই বলেন, এই কমিটিতে যারা নির্বাচিত হয়ে এসেছেন সকলেরই রয়েছে অভিজ্ঞতা এবং আন্তরিকতা। তিনি কামাল ইয়াকুব, অলি খান, সাঈদুর রহমান বিপুল ও মিঠু চৌধুরীর প্রশংসা করে বলেন, আমার বিশ্বাস আমাদের পূর্বপুরুষদের শ্রম ও ঘামে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটিকে নতুন নেতৃত্ব আরো অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিসিএ’র বিগত দিনের কার্যক্রমের উপর একটি ডকুমেন্টারী প্রদর্শন করা হয়। এতে উঠে আসে বিসিএ’র লক্ষ্য উদ্দেশ্য এবং ৫৭ বছরের কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বিবরণ।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল তালতরঙ্গের শিল্পিদের নৃত্য। বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে চলে নৃত্য এবং সঙ্গীত। সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিলেতের জনপ্রীয় শিল্পিরা। নবনির্বাচিত কমিটির প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি এবং চীফ টেজারারকে ফুল দিয়ে বরন করেন বিদায়ী কমিটির প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি ও অন্যরা।
অন্যদিকে বিদায়ী কমিটির প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি ও টেজারার, সাবেক প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ এমবিইকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট তুলে দেন। অন্যদিকে নবাগত কমিটির পক্ষ থেকে বিদায়ী নেতৃবৃন্দকে ফুলের তোড়া উপহার দেওয়া হয়। বিদায়ী নেতৃত্বের হাতে অতিথিদের সাথে নিয়ে ক্রেস্ট তুলে দেন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এনামুল হক চৌধুরী, ফজল উদ্দিন, মোজাহিদ আলী চৌধুরী, ইউসুফ সেলিম সৈয়দ হাসান আহমদ, মেম্বারশীপ সেক্রেটারি সাইফুল আলম প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে স্পনসরদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন শেফ অনলাইনের সিইও এস এম মোমিন, কোবরা বিয়ারের সেলস ডিরেক্টর সামসং সোহেল, কিংফিসার বিয়ার এর সিইও ডেমন সোয়াব্রিক, আগ্রসোপারের ডিরেক্টর ড্ইেভ ফ্লিটউড, স্কয়ার মাইল ইন্সরেন্স কোম্পানীর এমডি ডেভিড নাইক রয়েসটন প্রমুখ। সংগঠনের অর্গেনাইজিং সেক্রেটারি মিঠু চৌধুরীর ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটে। এর পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
১১৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি: ২০১৭-২০১৯ মেয়াবে নবনির্বাচিতরা হলেন প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল ইয়াকুব, সেক্রেটারি জেনারেল অলি খান, চীফ ট্রেজারার সাইদুর রহমান বিপুল, অগ্রানাইজিং সেক্রেটারি মিঠু চৌধুরী, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জামাল উদ্দিন মোকাদ্দুস, মোহাম্মদ ফজল উদ্দিন, মোজাহিদ আলী চৌধুরী, ইনামুল হক চৌধুরী, শাহ আব্দুল মালিক আজাদ, দরছ আহমদ, রফিক মিয়া, মোঃ আব্দুল সোলমান জেপি, মোঃ মইনুল আমিন বুলবুল, মোঃ ইউসুফ সেলিম, আনিছুল হক চৌধুরী, সৈয়দ হাসান আহমদ, টিপু রহমান, মঈনুদ্দিন ও মেহেরুল ইসলাম। ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল হান্নান, শাকুর আলী, শাব্বির আহমদ চৌধুরী, শামীম আহমদ, মাসুদ আহমদ, মানিক মিয়া, আব্দুল লতিফ কাওছার, আব্দুস সোবহান, এম আব্দুল হাকিম আজাদ, আব্দুল মান্নান, আব্দুর রহমান বাবুল, মোঃ কামরুজ্জামান জোয়েল, ফিরুজুল হক, মোহাম্মদ নাজাম উদ্দিন নজরুল, গোলাম রব্বানী আহমদ, আব্দুল হাফিজ, আব্দুল খালিক চৌধুরী, ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হেলাল মালিক, ঝুনু মিয়া, জয়েন্ট ট্রেজারার মোঃ ফাইজুল হক, জিয়া আলী, চৌধুরী, ডেপুটি অর্গানাইজিং সেক্রেটারি সহিদুল হক চৌধুরী লিটন, দিলওয়ার হোসাইন, মেম্বারশীপ সেক্রেটারি সাইফুল আলম, জয়েন্ট মেম্বারশীপ সেক্রেটারি নাজ ইসলাম, আশরাফ তালুকদার, পাবলিক রিলেশন সেক্রেটারী আমিনুর রশিদ সেলিম, জয়েন্ট পাবলিকেশন সেক্রেটারী মোহাম্মদ আনওয়ারুল ইসলাম, সহকারী পাবলিক রিলেশন সেক্রেটারী হুমায়ুন রশিদ, প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি ফরহাদ হোসেন টিপু, এ্যাসিসটেন্ট প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারী ছুরুক মিয়া, ট্রেনিং এন্ড এডুকেশন সেক্রেটারী ফজলে রাব্বি চৌধুরী, এ্যাসিটেন্ট ট্রেনিং এন্ড এডুকেশন সেক্রেটারি মোহাম্মদ আব্দুল কাদির, সোসিয়েল এন্ড ক্যালচারাল সেক্রেটারি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, স্পোর্টস সেক্রেটারি মোহাম্মদ হোসাইন কামালী। নির্বাহী সদস্যবৃন্দ হলেন সর্বজনাব পাভেজ আহমদ, এম সিরাজুল ইসলাম রোশন আলী, মোহাম্মদ বুলবুল, আব্দুল মালেক, আবজল হোসাইন, মোহাম্মদ আব্দাল মিয়া, লুদু মিয়া চৌধুরী, আলতাফ হোসাইন, আনসার মিয়া, আবুল মনসুর জুয়েল, আব্দুল হক, আলাউদ্দিন (বাবুল), আব্দুল সুফিয়ান, ওয়াহিদ রহমান বুলু, বাদশা কাদির, আব্দুল মতিন তালুকদার, আহমেদ আলী, সালিম চৌধুরী, আব্দূল রাজ্জাক, বদরুল উদ্দিন রাজু, জোবায়ের জামান, জাহিদ আলী খোশনু, আব্দুল কাদির, আশরাফ হোসাইন মুকুল, শামসুল এ খান শাহীন, মোহিবুর রহমান, সালিকুর রহমান, মাসুম আহমদ, গোলাম রব্বানী আহাদ, আব্দুল রব, মোসলেহ আহমদ, জিয়াউল হক, ফজলুর রহমান, শাহাব উদ্দিন, হোসাইন আহমদ, শিপু মিয়া, মোস্তাফিজুর খন্দকার পায়েল, জাহাঙ্গির হক, সেলু মিয়া, মোহাম্মদ আলতাফুর রহমান শাহীন, সৈয়দ আবুল মনসুর লিলু, গোলাম খান নূরানী, রেহান রাজা, ফয়সল চৌধুরী, টিপু মিয়া, আতাউর রহমান লায়েক, ইয়ামিন আর এইচ দিদার, কয়ছর উদ্দিন মাহমুদ,আতিকুর রহমান (শেফ), তৌরিছ আলী, আব্দুল হক, মোহাম্মদ গণী, আব্দূল করিম নাজিম, আতাউর রহমান (মিঠু), হেলাল উদ্দিন, মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান জয়নাল, ওয়ালিউর রহমান চৌধুরী টিপু, নূরুর রহমান খন্দকার পাশা, এম এ মোনিম, বজলুর রশিদ এমবিই, এ এস এম আহমেদ বাবলা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি