টাওয়ার হ্যামলেটসে বাড়ি ভাড়ার বিশেষ নীতিমালা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুলাই ২০১৭
এলবিটিএইচ নিউজ : টাওয়ার হ্যামলেটসে প্রাইভেট ভাড়াটিয়াদেরকে হয়রানী বন্ধ এবং তাদের সুবিধার্থে বিশেষ নীতিমালা চালু করা হয়েছে। প্রাইভেট রেন্টার্স চার্টারম্ব নামে চালুকৃত এই নীতমালাটি গত ২৯ জুন বারার নির্বাহী মেয়র জন বিগস এবং ডেপুটি মেয়র ও হাউজিং বিষয়ক কেবিনেট মেম্বার কাউন্সিলার সিরাজুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেন। এখন থেকে ল্যান্ড লর্ড এবং এস্টেট এজেন্টদের এই চার্টার বা নীতিমালা মেনে টাওয়ার হ্যামলেটসে তাদের ঘরবাড়ি ভাড়া দিতে হবে। এই চার্টারে বাড়ির মালিকদের তাদের বাড়ি ভাড়া দেয়ার নিয়মসমূহ এবং ভাড়াটিয়াদের অধিকার সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ রয়েছে। একই সাথে এস্টেট এজেন্টদের জন্যও নির্দেশনা রয়েছে এই চার্টারে।
চার্টারের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হচ্চেছ-
১) ভাড়াটিয়াদের সাথে কোন ধরনের বৈষম্য করা যাবে না।
২) লেটিং ফি এজেন্টের অফিস এবং অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে।
৩) এজেন্টকে অবশ্যই একটি ইন্ডিপেনডেন্ট কমপ্লেইন কমিশনের অধীনে থাকতে হবে।
৪) টেন্যান্সি টার্মস এন্ড কন্ডিশন ন্যায় সঙ্গত এবং বোধগম্য হতে হবে এবং কোন কিছু লুকায়িত থাকতে পারবে না।
৫) টেন্যান্সি টার্ম শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো যাবে না।
৬) ভাড়াটিয়াকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ আইন মোতাবেক হতে হবে।
৭) ভাড়া বাড়ির গ্যাস সেইফটি সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
৮) বাড়িতে কোন ধরনের ড্যাম্প অথবা চিতা থাকতে পারবে না।
৯) বাড়িতে স্মোক এলার্ম এবং কার্বন মনোস্কাইড ডিটেক্টর থাকতে হবে।
১০) বাড়ি অবশ্যই ভালো কন্ডিশনে থাকতে হবে এবং প্রয়োজনীয় রিপেয়ার সময়মতো করতে হবে।
১১) বাড়ি ভাড়া দেয়ার প্রয়োজনীয় অনুমতি থাকতে হবে।
১২) ভাড়াটিয়ার সাথে দেখা করতে হলে অন্তত ২৪ঘন্টার নোটিশ দিতে হবে। বাড়ির মালিক অথবা এজেন্ট যখন তখন এসে বিরক্ত করতে পারবেন না।
১৩) বাড়িওয়ালা বা এজেন্ট কর্তৃক ভাড়াটিয়াকে শুরুতেই ‘How to Rent’বুকলেট দিতে হবে।
১৪) বাড়ির মালিক অথবা এজেন্টকে ডিপোজিট স্কিমে ডিপোজিটের অর্থ রাখতে হবে।
এদিকে এই চার্টার চালু করে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র জন বিগস তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ভাড়াটিয়াদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অবসান এবং তাদের নিরাপদ বসবাস নিশ্চিত করার জন্যই এটি চালু করা হয়েছে। মেয়র বলেন, আমাদের হাউজিং স্ট্র্যাটিজির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্চেছ প্রাইভেট সেক্টরের ভাড়ার মান বৃদ্ধি। প্রাইভেট ভাড়ার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই এটি একটি ইস্যু ছিলো। ল্যান্ডলর্ড লাইসেন্স চালুর মাধ্যমে ইতোমধ্যে এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি এই চার্টার একে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। মেয়র বলেন, এই চার্টার প্রাইভেট ভাড়াটিয়াদের দ্রুত এবং সহজ পদ্ধতিতে তাদের অধিকার সম্পর্কে ধারনা দেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনের সময় তারা কোথায় সাহায্য পাবেন তাও বলে দেয়া আছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে টাওয়ার হ্যামলেটসের ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ৪৬ হাজার বাড়ি প্রাইভেট ল্যান্ড লর্ডদের কাছ থেকে ভাড়া নেয়া। অন্যদিকে সোশাল রেন্টেড ঘরবাড়ির সংখ্যা হচ্চেছ ৩৬ শতাংশ। কাউন্সিলের এক পরিসংখ্যান মতে টাওয়ার হ্যামলেটসে আনুমানিক ৯ হাজার বাড়ি যথাযথ নিয়ম মেনে ভাড়া দেয়া হয়নি। এসব বাড়ির ভাড়টিয়ারা বাজে অবস্থায় রয়েছেন। আর রাইট টু বাইয়ের অধীনে কেনা ৬ হাজার সাবেক কাউন্সিল ফ্ল্যাট বা বাড়ি প্রাইভেটভাবে ভাড়া দেয়া হয়েছে। টাওয়ার হ্যামলেটসে ঘরবাড়ি ভাড়া নেয়ার প্রবনতা দিন দিনই বাড়ছে। বর্তমানে টাওয়ার হ্যামলেটসের জনসংখ্যা হচ্চেছ ৩শ হাজারের কাছাকাছি এবং ২০২৬ সালের মধ্যে তা বেড়ে গিয়ে ৩শ ৭৪ হাজারে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাইভেট রেন্টার্স চার্টারম্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে- www.towerhamlets.gov.uk/privaterenterscharter.