ইউকেবিসিসিআই বিজনেস অ্যাওয়ার্ডসের প্রেস লঞ্চিং : ‘অজানা হিরোদের কমিউনিটিতে তুলে ধরাই আমাদের মুল প্রয়াস’
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জুলাই ২০১৭
দেশ রিপোর্ট: আগামী ১৫ অক্টোবর রোববার বৃটেনের অভিজাত লন্ডন হিলটন পার্কলেন হোটেলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউকেবিসিসিআই’র দ্বিতীয় বিজনেস এন্ড এন্টারপ্রেনার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস ২০১৭। প্রথমবারের সাফল্যের পর দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এই অনুষ্ঠান সফল করতে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে গত ২৪ জুলাই সোমবার বিকেলে পূর্ব লন্ডনের রেডিসন হোটেলে আয়োজন করা হয় এক সংবাদ সম্মেলন। এতে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ ফর বৃটিশ কারি ইন্ডাষ্ট্রির চেয়ারম্যান পল স্কালি এমপি। বক্তব্য রাখেন ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউকেবিসিসিআই) চেয়ারম্যান, বৃটেনে বাংলাদেশী শীর্ষ ব্যবসায়ী ইকবাল আহমদ ওবিই, ইউকেবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট বজলুর রশীদ এমবিই, বাংলাদেশ হাইকমিশনের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর শরীফা খান ও বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন ইউকের সদ্যসাবেক প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকার। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন ইউকেবিসিসিআই’র ডাইরেক্টর রহিমা মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে পল স্কালি এমপি বলেন, বৃটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটি শুধু বৃটেনের কারি ইন্ডাস্ট্রিতেই অবদান রাখছে না, প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বলেন, অর্ধমিলিয়ন বাংলাদেশী বৃটেনে বসবাস করেন। তারা প্রত্যেকেই বৃটেনের অর্থনীতিতে ভুমিকা রাখছেন। পল স্কালি এমপি বলেন, বাংলাদেশে ঢাকা ও সিলেটে আইটিতে অনেক ট্যালেন্ট রয়েছেন যারা বৃটেনের আইটি ইন্ডাষ্ট্রিতে অবদান রাখতে পারেন।
ইকবাল আহমদ ওবিই বলেন, বৃটিশ-বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য কিছু করার দায়বোধ থেকেই ইউকেবিসিসিআই’র জন্ম। আমরা আমাদের পকেটের অর্থেই কমিউনিটিকে কিছু দেয়ার চেষ্টা করছি। আশাকরি কমিউনিটির মানুষ আমাদের কাজের মুল্যায়ন করবেন। সংগঠনকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবেন। তিনি বলেন, বৃটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অনেক হাইব্রিড এনআরবি রয়েছেন যারা কমিউনিটি থেকে সম্পুর্ণ বিচ্ছিন্ন। আমাদের অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, লুকিয়ে থাকা হিরোদের খুঁজে বের করে কমিউনিটির সামনে পরিচয় করিয়ে দেয়া। আমরা আমাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সফল হচ্ছি। গতবারের অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে আমরা এমন অনেক ট্যালেন্টকে খুঁজে পেয়েছি যারা কমিউনিটিতে ছিলো সম্পুর্ণ অজানা-অচেনা।
ইকবাল আহমদ ওবিই বলেন, ইউকেবিসিসিআই বৃটেন-বাংলাদেশ দুদেশের মধ্যে সেতু বন্ধনে কাজ করছে। বাংলাদেশে এখন বিভিন্ন খাতে বৃটিশ-বাঙালি ট্যালেন্টদের চাকরির সুযোগ রয়েছে। বিশেষকরে একাউন্টিং একটি উল্লেখযোগ্য খাত। আমরা তাদেরকে বাংলাদেশে যেতে উদ্ধুদ্ধ করতে পারি। তাছাড়া বাংলাদেশে যেসকল মেধাবী আছেন তাদেরকে বৃটেনের কাজে লাগাতে সুযোগ সৃষ্টির জন্য কাজ করছি। তিনি বলেন, বৃটেন থেকে বাংলাদেশে গিয়ে একটি ছেলে বাংলাদেশী মেয়েকে বিয়ে করছে। আবার বাংলাদেশ থেকে একটি ছেলে বৃটেনে এসে বৃটিশ-বাংলাদেশী মেয়েকে বিয়ে করছে। এতে করে দুদেশের মধ্যেকার সামাজিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হচ্ছে। শুধু বাণিজ্যিক কিংবা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সামাজিক ক্ষেত্রেও বৃটেন বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। ইউকেবিসিসিআই দুদেশের মধ্যকার সবধরনের সম্পর্ক সুদৃঢ় করতেই কাজ করছে।
ইউকেবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ এমবিই বলেন, তিন বছর আগে ইউকেবিসিসিআই প্রতিষ্ঠিত হলেও এই সংগঠন অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে ব্যবসাখাতে সাহসী এবং সম্মানীত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। গত বছর আমাদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমপি, ভিআইপি এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিসহ প্রায় ৮শ ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেছেন। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুধু প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউকেবিসিসিআই এর নাম ছড়িয়েছে তা নয়, ব্রিটেন এবং বাংলাদেশে এন্টারপ্রেনারগণ কী করছেন তা তুলে ধরতে আমাদের উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয়েছে। পাশা খন্দকাল বলেন, বৃটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেক সাফল্য আছে। আমরা অনেক কিছুই করছি। কিন্তু আমাদের একটা জায়গায় ঘাটতি রয়েছে। তাহলো আমরা আমাদের সাফল্য মূলধারায় তুলে ধরতে পারছিনা। আমি আশাবাদী ইউকেবিসিসিআই কমিউনিটির সফল কাজগুলো মুলধারায় তুলে ধরতে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।
উল্লেখ্য, স্থানীয় এবং বৃহত্তর পরিসরে এবং ব্রিটেন, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক খাতে সফলতার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছিল প্রথমবার অনুষ্ঠিত পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে। ইউকেবিসিসিআই-এর চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিই এবং প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ এমবিইসহ কয়েকজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর হাতেগড়া এই সংগঠন তাঁদের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যবসায়ী কমিউনিটির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিশ্রুতিশীল উদ্যেক্তা এবং ব্যবসায়ীদের পরামর্শ, প্রচারণা, প্রশিক্ষণ এবং ব্যবসায়ীক জনসংযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে ইউকেবিসিসিআই। এসব সেমিনারে ব্রিটেন এবং বাংলাদেশের সরকারী মন্ত্রী, দপ্তর, সংগঠন, চেম্বার অব কমার্স এবং ব্যবসায়ীগণ উপস্থিত থাকেন। এছাড়া রোড শো আয়োজন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন, অনুষ্ঠানমালা এবং প্রকল্প প্রণয়ন করে থাকে। ইউকেবিসিসিআই এর সহযোগিতায় এসব পরিকল্পনার ফলে নতুন এবং পুরাতন ব্যবসায়ীদের মধ্যে যেমন আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় তেমন ব্রিটেন এবং বাংলাদেশে তাদের যোগাযোগও বাড়ে।
ব্যবসা এবং উদ্যোক্তা হিসেবে সফলতার জন্য মনোনয়নের ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে বেস্ট নিউ বিসনেজ, কন্ট্রিবিউশন টু দ্যা ইন্ডাস্ট্রি, ইয়ং এন্টাপ্রেনার অব দ্যা ইয়ার এবং বেস্ট প্রোডাক্ট অব দ্যা ইয়ারসহ আরো কয়েকটি ক্ষেত্র রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বিজনেস এন্ড এন্টারপ্রেনার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস ২০১৭-এর জন্য নমিনেশন আহবান করা হয়। আগামী ১২ আগষ্ট পর্যন্ত আগ্রহীরা নমিনেশন দাখিল করতে পারবেন।