বার্মিংহ্যামে বাংলাদেশী ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলার উৎসব ১৪ আগস্ট : চলছে প্রস্তুতি
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ আগস্ট ২০১৭
দেশ রিপোর্ট: যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাংলাদেশী অধু্যষিত শহর বার্মিংহ্যামে দ্বিতীয়বারের অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশী ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলার উৎসব। বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিষদ ইউকের উদ্যোগে আগামী ১৪ আগস্ট সোমবার সকাল এগারোটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত বার্মিংহামের স্মল হীথ লেজার সেন্টারে দিনব্যাপী এই ক্রীড়া উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন সকালে ক্রীড়া উৎসব আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন বার্মিংহামস্থ বাংলাদেশ মিশনের সহকারী হাইকমিশনার মোহাম্মদ জুলকার নায়েন। ক্রীড়া উৎসব সফল করতে ক্রীড়ামোদী বাংলাদেশীদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন ক্রীড়া পরিষদ ইউকের নেতৃবৃন্দ।
গত ১ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল রোডস্থ একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রীড়া উৎসবের বিস্তারিত বিবরনী তুলে ধরা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিষদ ইউকের জেনারেল সেক্রেটারি সাহিদুর রহমান সুহেল। বক্তব্য রাখেন ক্রীড়া পরিষদ ইউকের উপদেষ্টা কমরেড মসুদ আহমদ, প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল ইসলাম বেলাল ও ‘বাংলা ভয়েস’ সম্পাদক প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ মারুফ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিলেতে বাংলাদেশীদের ধারাবাহিক অবস্থান এখন তৃতীয়-চতুর্থ প্রজন্ম পর্যন্ত । শিকড়েরপ্রতি টান, দেশ মাতৃকারপ্রতি ভালবাসার বিচারে অন্যান্য অনেক জাতি-গোষ্টি থেকে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূতরা অনন্য। হাজার বছরের বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্য সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড-তৎপরতা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত পৌঁছে দিতে বিলেতের প্রবাসীরা সেই সূচনাকাল থেকেই ছিলেন তৎপর, সচেতন ও সজাগ। সেই ধরাবাহিকতা রক্ষায়ই পুরানো দিনের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়েই এই ক্রীড়া উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ক্রীড়া উৎসবের মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিলুপ্ত ও বিলুপ্ত হতেচলা ঐতিহ্যের অনেক খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পুনঃপ্রচলন এবং সেসবের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা।
উক্ত উৎসবে যে কোনো বয়সের যে কেউ নিজেদের পছন্দমত এক বা একাধিক খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন । খেলাগুলির মধ্যে রয়েছে: কাবাডি, কানামাছি, মোরগের লড়াই, বিস্কুট দৌড়, সুই-সুতা দৌড়, হাঁড়ি ভাঙ্গা, চেয়ার দৌঁড়, দৌঁড়, বালিশ দৌঁড়, মার্বেল দৌঁড়, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, লুডু, দড়ি ফাল প্রভৃতি। কোন ধরণের এন্ট্রি ফি ছাড়াই এসব খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে । শুধুমাত্র ফুটবলে ত্রিশ পাউন্ড এবং ব্যাডমিন্টনে পঁচিশ পাউন্ড এন্ট্রি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, গত বছর প্রথমবারের মত আয়োজিত ক্রীড়া উৎসবে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য, নানা ধরণের দেশীয় বিনোদনে ভরপুর ছিল। ব্যাপকভাবে আয়োজিত এ ক্রীড়া উৎসবে ব্রিটেনের বিভিন্ন শহর থেকে বিপুলসংখ্যক দর্শক ও অংশগ্রহণকারীর উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তুলে । এবছরের আয়োজনও ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে । খেলাধূলায় অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা গতবারের চেয়েও আরো বাড়বে এবং প্রতিটি ইভেন্টই প্রতিযোগিতামূলক হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা । বড় বড় সব শহরের প্রতিনিধিত্বের রেজিস্ট্রেশন চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিষদ ইউকের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি বলেন, বাংলাদেশের এই ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলা বৃটেনের মূলধারার কাছে তুলে ধরতেও তাঁদের বিভিন্ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় বৃটিশ এমপিসহ মূলধারার বিশিষ্টজনের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তাঁরা নিরলসভাবে কাজ করছেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে, সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ বলেন, গতবারের সাফল্যের ধারাবাহিকতায়ই তাঁরা এ বছর আরো বড় পরিসরে এই উৎসব আয়োজন করছেন। ভবিষ্যতে লন্ডনসহ দেশের অন্যান্য শহরেও বার্ষিক ক্রীড়া উৎসব আয়োজনের কথা ভাবছেন।