থাইল্যান্ডের চোখে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় প্রবেশদ্বার বাংলাদেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ আগস্ট ২০১৭
দেশ ডেস্ক: বাংলাদেশকে শুধু ব্যবসায়ী অংশীদার হিসেবেই দেখছে না থাইল্যান্ড। ভারতের সঙ্গে সীমান্ত থাকায় এ দেশকে তারা মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রবেশদ্বার বা গেটওয়ে হিসেবে দেখছে। এসব কারণে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট বা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার কথা ভাবছে থাইল্যান্ড। এ খবর দিয়েছে থাইল্যান্ডের পত্রিকা ব্যাংকক পোস্ট।
এতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশে আরো বেশি পরিমাণ চাল রপ্তানি করার মাধ্যমে থাইল্যান্ড বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করতে চায়। এমন কথা বলেছেন থাইল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী আপিরাদি তানট্রাপর্ন। তিনি বলেছেন, ৪র্থ থাইল্যান্ড-বাংলাদেশ যৌথ বাণিজ্য কমিটির (জেটিসি) মিটিং শুরু হচ্ছে ঢাকায় ৯ ও ১০ই আগস্ট। এজন্য থাই প্রতিনিধিরা ঢাকায় ওই বৈঠকে যোগ দেবেন। এ সময়ে প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এ সময় বেশ কিছু বাণিজ্যিক সহযোগিতামূলক ইস্যু আলোচনায় উত্থাপন করা হবে। থাই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দু’দেশের সম্পর্ক উন্নত করার জন্য এ বৈঠক খুব ভালো একটি সুযোগ তৈরি করবে। একই সঙ্গে অদূর ভবিষ্যতে এটা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার ক্ষেত্রে পথ দেখাবে। এ বৈঠকে থাইল্যান্ড থেকে অধিকার পরিমাণে চাল কেনার বিষয়টি আলোচনায় উত্থাপন করবে বাংলাদেশ। এর ওপর ভিত্তি করে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করতে চাইতে পারে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি থাইল্যান্ড থেকে এশিয়ার যেসব দেশ চাল কিনেছে বা কিনতে যাচ্ছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। কারণ, গত কয়েক বছরে এসব দেশের খাদ্যশস্য দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চালের সংকট দেখা দেয়ায় থাইল্যান্ড থেকে প্রায় ২ লাখ টন আতপ চাল কেনার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। এখনো দু’দেশ এ চালের দাম ও সরবরাহের পিরিয়ড বা সময় নিয়ে দর কষাকষি করছে। তাই এখনো এ বিষয়ে চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি। তবে স্বল্প মেয়াদে চাল কেনার জন্য একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এর ফলে সুনির্দিষ্ট পরিমাণ চাল প্রতি বছর থাইল্যান্ড থেকে কিনতে পারবে বাংলাদেশ। তাতে দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। দু’দেশের মধ্যে বৈঠকে আরো যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তার মধ্যে রয়েছে কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ফিশারি, নির্মাণ শিল্প, জ্বালানি ও পর্যটন ইস্যুতে সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ।
ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ ১৬ কোটি মানুষের দেশ। এখানে বার্ষিক জাতীয় প্রবৃদ্ধি গড়ে শতকরা ৬ ভাগ। গত ১০ বছর ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও পাকিস্তানের পর বাংলাদেশ হলো থাইল্যান্ডের তৃতীয় বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। এখানে উভয় দেশের মধ্যে গত বছর বাণিজ্য হয়েছে ১০০ কোটি ডলারের। এর আগের বছরের তুলনায় তা শতকরা ১০.৪ ভাগ বেশি। বাংলাদেশে প্রায় ৯৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এরমধ্যে রয়েছে প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য, রাসায়নিক পণ্য, সিমেন্ট, টেক্সটাইল, স্টিল, কসমেটিকস প্রভৃতি। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড আমদানি করে তৈরি পোশাক, সার ও পশুসম্পদ।