লিভারপুল বাংলা প্রেস ক্লাব সভাপতি শেখ ছুরত মিয়া আছাবের ছেলের শুভবিবাহ সম্পন্ন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ আগস্ট ২০১৭
বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটির দিনেই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তা নাহলে ব্যাংক হলিডে বা অন্য কোন দিনে। আর কর্মদিবস হলে বিকেল বেলা অথবা সন্ধ্যার পর। তখন অতিথিরা সাচ্ছন্দে এতে যোগদান করতে পারেন। কিন্তু সেদিন ছিল না কোন সাপ্তাহিক বা অন্য কোন সরকারী-বেসরকারী ছুটির দিন। তাও আবার দুপুর বেলা। এমন একটি কর্মদিবস ও কর্মব্যস্ত সময়ে আমন্ত্রিত-অতিথিরা যোগদান করেন লিভারপুলের ডেভনশায়ার হাউস হোটেলে, যেখানে অনুষ্ঠিত হলো লিভারপুর বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি শেখ ছুরত মিয়া আছাবের ছেলের বিয়ে। একে একে অতিথিরা যখন এ বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান করছিলেন তখন মনে হচ্ছিল তারা কোন লৌকিকতায় নয়, অন্তরের আহবানেই সেখানে সমবেত হচ্ছেন। খোঁশ গল্পে মেতে উঠেছেন একে অন্যের সাথে। প্রায় ৬ ঘন্টাব্যাপী পরিচালিত এ অনুষ্ঠানে বিয়ের বিভিন্ন পর্বে লিভারপুল ছাড়াও লন্ডন, ওলডহ্যাম, হাইড, ব্রাডফোর্ড, নিউক্যাসলসহ বিভিন্ন শহরের অতিথিদের সমাগম ঘটে। শেষ হয়েও যেন শেষ হচ্ছিলনা অনুষ্ঠানটি। চা পানসহ খোঁশগল্পে মেতে উঠে সবাই যেন অপেক্ষায় ছিলেন- এর পর আরো কিছু থাকতে পারে? এক সময় হলের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলেও হল কর্তৃপক্ষ আরো কিছু সময় বরাদ্দ করেন অন্তত সৌজন্যতার খাতিরে। আমি যেহেতু লন্ডন থেকে ট্রেনে করে সে বিয়েতে যোগদান করেছিলাম সুতরাং ট্রেনের নির্ধারিত সময় চলে আসায় আমাকে সেখান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছিল। আর তখন সময় ছিল সন্ধ্যা ৭টা। তখনও হলের মধ্যে স্থানীয় অতিথিরা অবস্থান করছিলেন।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ছুরত মিয়া আছাব আত্মীয়তার সম্পর্কে আমার বিয়াই। আমার বড় মেয়ের জামাই শেখ জালাল তার আপন ভাতিজা। আমার বিয়াই শেখ মনির মিয়া দেশে অবস্থান করেন। স্থানীয় লিভারপুল মার্সিসাইড এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি শেখ দুদু মিয়া আমার বিয়াই এর বড় ভাই। অবশ্য তাদের সাথে আমার সম্পর্ক বা যোগাযোগ এ বিয়ের অনেক পূর্ব থেকে। বিশ¡নাথ দর্পণ প্রকাশের সময় এবং পরবর্তী সময়ে তাদের অনেক সহযোগিতা রয়েছে। এখনও সেটা অব্যাহত আছে এবং আশা করি ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
গত ১ আগস্ট মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত উক্ত বিয়ের পাত্র নাম শেখ দেলোয়ার মিয়া, পিতা শেখ সুরত মিয়া এবং কনের নাম রহিমা মিয়া, পিতা লালা মিয়া। উভয়ই লিভারপুলে বসবাস করেন। বর পক্ষের দেশের বাড়ি বিশ¡নাথ উপজেলার উত্তর ধর্মদা গ্রামে এবং কনে পক্ষের দেশের বাড়ি একই উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের কান্দিগ্রামে। শেখ সুরত মিয়াআছাব বিগত ৩৫ বছর যাবত সে এলাকায় বসবাস করছেন। এখানকার বাঙালি কমিউনিটির বিভিন্ন কার্যক্রমে তিনি সক্রিয়ভাবে জড়িত। রাজনীতি ছাড়াও বাঙালি শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিকাশে পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন থেকে। বর্তমানে তিনি লিভারপুল বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও স্থানীয় মার্সি সাইড বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের দায়িত্বে রয়েছেন। এ সংগঠনের সাবেক সভাপতি শেখ দুদু মিয়া ছিলেন তার আপন বড় ভাই। তিনি স্থানীয় এনইবিটিজেএ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট। বাংলা টিভি’র মার্সিসাইড ও নর্থওয়েলসএর ব্যুারো চিফ। সাবেক সভাপতি লিভারপুল বাংলাদেশ এসাসিয়েশন। তাছাড়া তিনি হিউম্যান রাইটস এন্ড পীস ফর বাংলাদেশ মার্সিসাইড শাখার সভাপতি। রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথেও তিনি দীর্ঘদিন থেকে জড়িত। কনের পিতা লালা মিয়াও স্থানীয় কমিউনিটির বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিয়োজিত আছেন। তিনি এক সময় মার্সিসাইড বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া আরো অনেক সংগঠনের সাথে তিনি বিশেষভাবে সম্পৃক্ত। কমিউনিটি কর্মকান্ডের দিক থেকে বিবেচনা করলে তাদেরকে ‘রতনে রতন চিনে’ বলেই আখ্যায়িত করা যায়।
এ বিয়েতে আরো যারা যোগদান করেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম ফারুক, বাংলা টিভির হেড অব নিউজ সারওয়ার হোসেন, সাংবাদিক আ স মাসুম, এম এ কাইয়ূম, হাবিবুর রহমান, জাকির হোসেন কয়েস, মিজানুর রহমান মিজান, সৈয়দ সাদিক আহমদ, ফখরুল আলম, ম আজাদ, আবু সাঈদ চৌধুরী সাদি, কলন্দর তালুকদার, মাহি মাসুম, কবি রফিক, এসহানুল হক, শাহ মোনিম, জাফর আহমদ, মোহাম্মদ শাহনূর, আব্দুর রহমান, সেতু চৌধুরী, আব্দুল হান্নান, আলিউর রহমান, শেখ দবির, শেখ বাবুল ও আলম শেখ প্রমূখ। লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুবায়ের এ বিয়েতে আমন্ত্রিত হলেও উপস্থিত হতে না পেরে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং বর-কনেকে শুভকামনা জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ সুরত মিয়া আছাব সবাইকে বর কনের জন্য আশির্বাদ করার আহবান জানান এবং তার ছেলে মেয়েদের উজ্জল ভবিষ্যতের জন্য দোয়া কামনা করেন।
রহমত আলী, সম্পাদক- মাসিক দর্পণ, লন্ডন।