মোবাইল চুরির অপবাদে গাছে বেঁধে শিশু নির্যাতন
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ আগস্ট ২০১৭
ঢাকা প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মোবাইল চুরির অপবাদে আম গাছের সাথে বেঁধে দুই শিশুকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। গত ৯ আগস্ট বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় শিশু নির্যাতনের এই নির্মম ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত দুই জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ বিচারক তাদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। নির্যাতিত শিশু জুয়েল চর মন্ডলপাড়া গ্রামের সিরাজুলের ছেলে এবং আসিফ একই এলাকার নিশানের ছেলে। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া জুড়ে তোলপাড় চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দুই শিশুর পরিবার সুত্রে জানা যায়, ৪-৫দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ার চরমন্ডলপাড়া এলাকার রূপালী নামে এক নারীর মোবাইল ফোন চুরি হয়। ওই ঘটনায় তারা একই এলাকার ৭ বছরের এতিম শিশু জুয়েল ও আসিফকে সন্দেহ করে রূপালী। বুধবার বিকেলে একই এলাকার প্রভাবশালী তানজিল ও মীর আক্কাস ওরফে মিরু শিশুদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তানজিলের শ্বশুর বাড়ির সামনে আমগাছের সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। শিশু দু’টি মোবাইল চুরির কথা অস্বীকার করলেও তাদের মারপিট করা হয়।
পরে শিশু আসিফের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে আসিফকে ছেড়ে দেয় তারা। বেধড়ক মারপিটের কারণে শিশু জুয়েল গুরুতর আহত হয়ে পড়লে সন্ধ্যায় তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দাযিত্বরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার হুসাইন মহম্মদ শিহাব জানান, শিশুটির শরীরের কয়েকটি স্থানে চাপা রক্ত জমাট বাধার চিহ্ন রয়েছে। চাপড়া ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য নুর মহম্মদ জানান, নির্যাতনের ভিডিওটি বুধবার রাতেই দেখেছি। এ ব্যাপারে নির্যাতিত ওই শিশুর পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কুমারখালী থানা পুলিশ এ ঘটনার অন্যতম হোতা ছেঁউড়িয়ার চর মন্ডলপাড়ার তানজিল ও তার শাশুড়ী রোকেয়া খাতুনকে বুধবার রাতেই গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এ ঘটনার অপর হোতা মীর আক্কাস ওরফে মিরুকে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। গত ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ গ্রেফতারকৃত দুই জনকে আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ বিচারক তাদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক জানান, নির্যাতিত শিশুটির পরিবার মামলা করতে চাননি। আমরা তাদেরকে থানায় ডেকে নিয়ে এসে পাশে দাঁড়িয়ে মামলা করিয়েছি। এলাকাবাসী এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।