৪০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ, মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনায় ভারত
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ আগস্ট ২০১৭
দেশ ডেস্ক: প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। এ নিয়ে কূটনৈতিক পর্যালে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কে এস ধাতওয়ালিয়া। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে যথাযথ সময়ে বিস্তারিত জানানো হবে। ওদিকে বাংলাদেশ সরকারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে নয়া দিল্লি। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়েছে, ভারতের দাবি সেখানে অবৈধভাবে বসবাস করছে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম। শুক্রবার সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, এ সব রোহিঙ্গাকে বের করে দেয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য রাজ্য সরকারগুলোকে টাস্কফোর্স গঠন করতে বলা হয়েছে। ১৯৯০ এর দশকের শুরুর দিক থেকে মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হাজার হাজার রোহিঙ্গা পালাতে থাকে। তারা আশ্রয় নেয় বাংলাদেশ। আবার কিছু কিছু সীমান্তের ফাঁকফোকড় দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে বসবাস করছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এজেন্সিতে নিবন্ধিত এমন রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। বাকিরা অবৈধ উপায়ে অবস্থান করছে। তাদেরকে ভারত এখন দেশ থেকে বের করে দিতে চাইছে। শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের কোনো চুক্তির অংশ নয় ভারত। ফলে জাতীয় পর্যায়ে যে আইন আছে তাতেও শরণার্থীদের বিষয়টি কাভার করে না। ওদিকে বুধবার পার্লামেন্টে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক জুনিয়র মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেছেন, অবৈধভাবে বসবাসকারীদের সনাক্ত করতে ও তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দিতে রাজ্য সরকারগুলোকে টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। উল্লেখ্য, কিরেন রিজিজু সম্প্রতি মিয়ানমার সফর করেছেন। তবে সেখানে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি।
এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের কোনো মন্তব্যও পাওয়া যায় নি। ওদিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনা বলেছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো ও পরিত্যক্ত রাখলে তা হবে অবিবেচকের মতো কাজ। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো নিয়ে নয়া দিল্লির পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য জানার চেষ্টা করছে ভারতে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের অফিস। রয়টার্স আরো লিখেছে, গত অক্টোবর থেকে ৭৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের ওপর হামলায় ৯ জন সদস্য নিহত হওয়ার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী নির্মম অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় তারা নারীদের ধর্ষণ করেছে। খুন করেছে বহু মানুষকে। পুড়িয়ে দিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। উল্লেখ্য, ভারতে প্রধানত জম্মু, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লির উত্তরে, হায়দরাবাদের দক্ষিণে ও রাজস্থানের পশ্চিমে বসবাস করে রোহিঙ্গারা।