এবার টাওয়ার হ্যামলেটসের সকল লাইব্রেরী বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা : কাউন্সিল সাশ্রয় করতে চায় ৪০ মিলিয়ন পাউন্ড
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২১:২৮,অপরাহ্ন ২৩ নভেম্বর ২০২০
দেশ ডেস্ক, ২২ নভেম্বর : লক্ষাধিক বাংলাদেশী অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের জরুরী সেবাখাতগুলো একটির পর একটি বন্ধ হয়ে পড়ছে। বর্তমান মেয়র জন বিগস প্রথমবার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সার্ভিস-কাট অব্যাহত রেখেছেন। ইতোমধ্যে ১৭টি ইয়ুথ ক্লাব, কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিস, ওয়ানস্টপ সার্ভিস, নাফাস ও বিভিন্ন লাঞ্চন ক্লাবসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপুর্ণ সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সবকিছু বন্ধের পর এবার সর্বশেষ পেরেক মারা হচ্ছে টাওয়ার হ্যামলেটসের তরুণ সমাজের জ্ঞানার্জনের কেন্দ্র আইডিয়া স্টোর ও লাইব্রেরীগুলো বন্ধ করে দিয়ে। এর মাধ্যমে কাউন্সিল ৪০ মিলিয়ন পাউণ্ড সাশ্রয় করতে চায়।
একাধিক সুত্রের ভিত্তিতে ১০ নভেম্বর এই খবর প্রকাশ করেছে ‘ইস্টএন্ড ইনকোয়ারার’ নামে একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যম। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে কমিউনিটিতে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংগঠন লাইব্রেরীগুলো রক্ষায় আন্দোলের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরী কাউন্সিলের এই পরিকল্পনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইয়ুথ ক্লাবগুলো বন্ধ করে দিয়ে তরুণ সমাজকে এমনিতেই গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। আইডিয়া স্টোরগুলো খোলা থাকায় সেখানে তারা কিছু সময় কাটাতে পারে। কিন্তু তাও যদি বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে তরুণদের আর যাওয়ার জায়গা থাকবে না। তরুণরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবে এবং নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়বে। তিনি টাওয়ার হ্যামলেটসের তরুণ সমাজকে অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে না দিতে নির্বাহী মেয়র জন বিগসের প্রতি আহবান জানান।
ইস্টএন্ড ইনকোয়ারার-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমানে টাওয়ার হ্যামলেটস বারায় ৭টি লাইব্রেরী ও আইডিয়া স্টোর রয়েছে। এগুলো হলো- ক্রিস্প স্ট্রিট আইডিয়া স্টোর, ওয়াটনি মার্কেট আইডিয়া স্টোর, হোয়াইটচ্যাপেল আইডিয়া স্টোর, ক্যানারি ওয়ার্ফ আইডিয়া স্টোর, বো আইডিয়া স্টোর, কিউবিট টাউন লাইব্রেরী ও ব্যানক্রফট রোডে অবস্থিত টাওয়ার হ্যামলেটস হিষ্ট্রি আর্কাইভ। গত ২৮ অক্টোবর কাউন্সিলে জমা দেয়া এক প্রতিবেদনে কোভিড-১৯ এর প্রভাব আইডি স্টোর ও লাইব্রেরীগুলো বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পার প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করা হয়। চলতি মাসের শেষের দিকে এ ব্যাপারে একটি কনসালটেশন শুরু হবে এবং আগামী বছরের প্রথম দিকে একটি বিশদ রিপোর্ট পেশ করা হবে।
তবে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেন, গত কয়েক বছর আমরা আইডিয়া স্টোরগুলোর সাথে মানুষের সর্ম্পক পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি। এখন মানুষ আমাদের অনলাইন সেবা নিচ্ছে। এসব বিবেচনা এবং করোনা মহামারির কারণে আর্থিক চ্যালেঞ্জিংয়ের মুখোমুখী হওয়ার কারণে আমরা নভেম্বরের শেষ দিকে এ ব্যাপারে পাবলিক কনসালটেশন আয়োজন করেছি। বারাবাসীর কাছে জানতে চাইবো, কীভাবে লাইব্রেরী সেবা প্রদান অব্যাহত রাখা যায়। তবে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। করোনার বিধি-নিষেধ মেনে আগের সব সেবা চালু রয়েছে। তবে কাউন্সিল থেকে পরবর্তীতে প্রেরিত আরো একটি বার্তায় আইডিয়া স্টোর বন্ধ করার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়।
এদিকে ১৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে সাপ্তাহিক দেশ থেকে একজন কাউন্সিলারের সাথে যোগাযোগ করে খবরের সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাউন্সিল আর্থিক সংকটে ভুগছে। তাই কাউন্সিলের সিনিয়র কর্মকর্তারা আইডিয়া স্টোর ও লাইব্রেরীগুলো বন্ধ করে দিয়ে ৪০ মিলিয়ন পাউণ্ড সাশ্রয়ে মেয়রকে প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে এটি এখনও প্রস্তাব পর্যায়েই আছে। আর কোনো আলোচনা হয়নি।