কুসিক নির্বাচন : ভোট শেষ, ফলাফলের অপেক্ষা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জুন ২০২২
দেশ ডেস্ক:: কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায় কুমিল্লাবাসী। আজ সকাল ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমের মাধ্যমে এ সিটির ভোটগ্রহণ করা হয়। দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে ভোটগ্রহণ। তবে ইভিএমের কারণে ভোটগ্রহণে ধীরগতির অভিযোগ ছিল ভোটারদের। এছাড়া বৃষ্টির কারণে কেন্দ্রে যেতে ভোটাররা দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছেন। এতে করে ভোট উৎসবে কিছুটা ভাটা পড়ে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এটি তৃতীয় নির্বাচন। ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের ৬৪০টি বুথে ইভিএমে ভোট গ্রহণ চলে। ২৭টি ওয়ার্ড মোট ভোটার ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ ভোটার।
বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা ও ধীর গতিতে ভোট গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রার্থীদের তরফ থেকে।
এমনকি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীও ভোটের ধীর গতি নিয়ে কথা বলেছেন। কুমিল্লা সিটির নির্বাচনে এবার মেয়র পদে লড়ছেন পাঁচজন। নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক (রিফাত)। বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ও সিটির সদ্য বিদায়ী মেয়র মনিরুল হক (সাক্কু) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন টেবিলঘড়ি নিয়ে। আজ সকাল সোয়া নয়টার দিকে ভোট দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক। তিনি বলেছেন, ভোটের পরিবেশ ভালো। তবে তিনি অভিযোগ করেন, ইভিএমে ধীরগতিতে ভোট গ্রহণ চলছে। কিছু জায়গায় ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন নির্বাচনী প্রচারের সময় ব্যাপকভাবে আলোচিত সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন। ভোট দিতে এসে তিনি বলেন, ভোটার আইডি নিয়ে গেছেন কিন্তু স্লিপ নিয়ে যাননি। তাই ভোট দিতে দেয়নি। ভোটারের চিঠি তো ভোটের অংশ না। ম্যাজিস্ট্রেট আইডি আটকে রেখেছেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আলিয়া মাদ্রাসার একটি কেন্দ্রে ভোট দেওয়া নিয়ে অনাকাঙ্খিত ঘটনার কথা জানান প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. নাইমুর রহমান। তিনি বলেন, সকালে এক ভোটার গোপন কক্ষে গিয়ে ব্যালটে চাপ দেওয়ার পর শব্দ শুনে তিনি ভয় পেয়ে বের হয়ে যান। তাঁর ভোট অসম্পূর্ণ থাকায় অন্য ভোটও নেওয়া যাচ্ছিল না। তাঁকে বুঝিয়ে ফের ভোট দিতে গোপন কক্ষে পাঠানো হয়। এ ছাড়া দুই ভোটার ইভিএমের ইলেকট্রিক ব্যালটে চাপ দিতে গিয়ে নিচে ফেলে দেন বলেও জানান প্রিসাইডিং কর্মকর্তা।
ইভিএমের ধীর গতির কারণে বিশেষ করে নারী ভোটারেরা অসুবিধায় পড়েছেন। সকাল আটটায় সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে পদুয়ার বাজার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছিলেন অন্তঃসত্ত্বা খাদিজা বেগম। তিনি জানান, দুই ঘণ্টা ধরে গরমের মধ্যে তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। অনুরোধ করেও আলাদাভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। তিনি একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বলছেন, অনুরোধ করেও ভোট দিতে না পারার বিষয়টি তিনি জানেন না। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট প্রদান ও গোলযোগের চেষ্টার দায়ে ছয়জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একজনকে তিন মাসের সাজা দেওয়া হয়। অপর পাঁচজনকে তিন থেকে এক সপ্তাহের সাজা দেওয়া হয়। কুমিল্লা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কামরুল হাসান এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছয়জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে।