লন্ডনে আলহাজ্ব শামসুজ্জামান চৌধুরী স্মরণে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৪৯:০৩,অপরাহ্ন ১৬ জুন ২০২২
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকে’র উদ্যোগে সদ্যপ্রয়াত প্রবীণ মুরব্বী, কর্মবীর কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব, চ্যারিটি সংস্থা রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের অন্যতম উপদেষ্টা আলহাজ্ব শামসুজ্জামান চৌধুরী স্মরণে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ১২ জুন রোববার পূর্ব লন্ডনের এশাআতুল ইসলাম ফোর্ড স্কয়ার মসজিদ মিলনায়তনে দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এতে নবনির্বাচিত মেয়র লুৎফুর রহমানসহ রেকর্ডসংখ্যক নেতৃস্থানীয় উলামায়ে কেরাম, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মুসল্লিরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুফতি আবদুল মুনতাকিম। সভা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন ইউকে জমিয়তের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ ও মরহুম আলহাজ্ব শামসুজ্জামান চৌধুরীর জামাতা মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ। পরিবার পরিজনের পক্ষ থেকে আবেগঘন স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা করেন মরহুম আলহাজ্ব শামসুজ্জামান চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ সন্তান জুবায়ের আহমদ চৌধুরী ও দ্বিতীয় ছেলে জুনায়েদ আহমদ চৌধুরী। সভায় নানা ব্যস্ততা সত্তে্বও লন্ডন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নব নির্বাচিত মেয়র লুৎফুর রহমান এবং আল খায়ের ফাউন্ডেশন ও ইকরা টিভি গ্রুপের চেয়ারম্যান মাওলানা ইমাম কাসিম রশীদ আহমদ বক্তব্য দেন এশায়াতুল ইসলাম ফোর্ড স্কয়ার মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস মুফতী আব্দুর রহমান মনোহরপুরী, বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব কবী দবিরুল ইসলাম চৌধুরী, লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নব নির্বাচিত স্পীকার শাফি আহমদ চৌধুরী, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা কে এম আবু তাহের চৌধুরী, শায়েখ মাওলানা মওদুদ হাসান, মাজাহিরুল উলূম লন্ডনের প্রিন্সিপাল শায়েখ মাওলানা ইমদাদুর রহমান আল মাদানী, ইষ্টলন্ডন মসজিদের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর দেলোয়ার হুসাইন খান, মাদীনাতুল খাইরী আল ইসলামির চেয়ারম্যান শায়েখ মাওলানা ফয়েজ আহমদ, লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদ রিজেন্টস পার্কের ইমাম ও খতীব শায়েখ কাজী লুৎফুর রহমান, সাপ্তাহিক জনমত পত্রিকার নির্বাহী স¤পাদক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, ফরেস্ট গেইট মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা হেলাল উদ্দীন, বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব সাজিদ আলী মেনন, খেলাফত মজলিস ইউকের সেক্রেটারী মাওলানা শাহ মিজানুল হক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের ট্রেজারার হাফিজ হুসাইন আহমদ বিশ্বনাথী, মাষ্টার আবদুর রউফ, মাওলানা ফাজিল চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলার মোহাম্মদ আব্দুল আসাদ,মাইল্যান্ড মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা নাজির উদ্দীন, ইউকে জমিয়তের যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতি সৈয়দ রিয়াজ আহমদ, সহ প্রচার সম্পাদক হাফিজ মাওলানা রশিদ আহমদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আব্দুল করীম মামরখানী, মাওলানা মাসূম আহমদ, চ্যানেল এস এর চিফ রিপোর্টার মোহাম্মদ জুবায়ের, পপলা শাহজালাল মসজিদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস যুক্তরাজ্য শাখার সেক্রেটারী মুফতি সালেহ আহমদ, ফোর্ড স্কয়ার মসজিদের সেক্রেটারী ইউনুস আলী, মাষ্টার আমীর উদ্দীন, মাদানী গার্লস স্কুল এর পরিচালক আলহাজ্ব আমীর উদ্দীন, মরহুমের জামাতা নাজমুল ইসলাম শাহান, কনিষ্ঠ জামাতা সালেহ আহমদ, মাওলানা আবদুল আজিজ, মাওলানা আবদুল আউয়াল, মরহুমের তৃতীয় ছেলে ফুজায়েল আহমদ চৌধুরী, হাফিজ মাওলানা মুশতাক আহমদ, হাফিজ গিয়াসউদ্দীন, হাফিজ জিয়া উদ্দিন ও আরীফ আহমদ সহ প্রচুর সংখ্যক উলামায়ে কেরাম ও সুধীজন।
দোয়া মাহফিলে সমাপনী বক্তব্য ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ব্রিটেনের সর্বজন শ্রদ্ধেয় বুযুর্গ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ আসগর হুসেইন।
সভায় বক্তারা আলহাজ্ব শামসুজ্জামান চৌধুরী স¤পর্কে স্মৃতিচারণ করে বলেন, মরহুম আলহাজ্ব শামসুজ্জামান চৌধুরী প্রায় সাত দশক অবস্থান কালে ব্রিটেনে বিভিন্ন মসজিদ- মাদ্রাসা ও মক্তব প্রতিষ্ঠা এবং কমিউনিটির উন্নয়নমূলক বহুমুখী কাজে অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন। সঠিক ইলিম, সুন্দরতম আমল, মার্জিত চারিত্রিক গুণাবলী এবং দোয়া মোনাজাত ও আল্লাহ ভীরুতায় তিনি ছিলেন সকলের জন্য এক উত্তম আদর্শ। তিনি এবাদত বন্দেগী, একাগ্র চিত্তে দোয়া-মোনাজাত এবং জনকল্যাণমূলক কাজে একনিষ্ঠ ভাবে কঠোর পরিশ্রমে বিশ্বাসী ছিলেন। লক্ষ্য সাধনে মহান আল্লাহর উপর মজবুত আস্থা স্থাপন ছিলো তাঁর একমাত্র ভরসা। তাওয়াক্কুল ও ভরসার এ সম্বল-ই তাঁকে বিভিন্ন উপকারী প্রজেক্ট বাস্তবায়নে সাফল্যের মঞ্জিলে উপনীত হতে সাহায্য করেছে। তিনি কম কথায় এবং বেশি কাজে বিশ্বাসী ছিলেন। অযথা বাক্যালাপ ও সমালোচনা থেকে দূরে থেকে ইতিবাচক ও কল্যাণমূলক কাজে আত্মনিয়োগই ছিল তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উলামায়ে কেরাম ও আল্লাহর নেক বান্দাদের সর্বক্ষণিক সান্নিধ্যও সাহচর্য তাঁর সবচেয়ে পছন্দনীয় অভ্যাস ছিল। যুগশ্রেষ্ঠ উলামায়ে কেরাম ও ওলী বুযুর্গদের কাছ থেকে বিশেষ দোয়া গ্রহনের মাধ্যমে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা ছিল তাঁর স্থায়ী রুটিন। বৃটেনের বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসা ও দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে ফাউন্ডার এর ভ‚মিকায় অবতীর্ণ এক মহান বুযুর্গ ছিলেন। ছোটদেরকে ¯েœহ মমতা, ভালবাসাও উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়ে আরো কর্মক্ষম করে তোলা ছিলো তার নিত্য জীবনের একটা মিশন। দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনত সর্বত্র অব্যাহত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ছিলো তাঁর স্বভাবজাত চাহিদা। জীবনের শেষ দিকে এসে আন্তর্জাতিক সংস্থা রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ও জগন্নাথপুর মেটারনিটি হসপিটাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি জনসেবার একটি যুগান্তকারী ও উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। সবকিছু তাঁর জন্য অনন্তকাল পর্যন্ত সাদাকায়ে জারিয়ার স্থায়ী স্মারক হয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি