অগ্নিনির্বাপনে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে ইস্ট লন্ডন মসজিদে লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের কনসালটেশন সভা
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৫৫:০৮,অপরাহ্ন ২১ জুন ২০২২
লন্ডনের গ্রেনফিল টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড সার্ভিস অগ্নি-নির্বাপনে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে লন্ডনের ৩৩টি বারার মানুষের মধ্যে কসালটেশন শুরু করেছে । এই পর্যন্ত প্রায় দেড়শ’ কনসালটেশন সভা করে নতুন পরিকল্পনার ব্যাপারে জনগনের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০ জুন সোমবার দুপুরে লন্ডন মুসলিম সেন্টরের সেমিনার হলে এক কনসালটেশন সভা অনুষ্ঠিত হয় । বিভিন্ন কমিউনিটির প্রায় অর্ধ শতাধিক নারীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই কনসালটেশন সভায় আগামী ২০২৩ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপন পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন টাওয়ার হ্যামলেটস ফায়ার ব্রিগেডের গ্রুপ কমাণ্ডার ও বারা পুলিশ কমাণ্ডার রিচার্ড টাপ, লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের এসিসটেন্ট কমিশনার জনাথন স্মিথ, লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের হেড অব কমিউনিটি এনগেইজমেন্ট ডনা পিটার্স, গ্রুপ কমান্ডার রিচার্ড এবোট ও ইস্ট লন্ডন মসজিদের ডাইরেক্টর দেলওয়ার খান। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইস্ট লন্ডন মসজিদের হেড অব প্রোগ্রামস ও মারিয়াম সেন্টারের প্রধান সুফিয়া আলম।
কনসালটেশন সভায় জানানো হয়, গ্রেনফিল টাওয়ারে অগিকাণ্ডের পর এই পথম অগ্নিনির্বাপনে করনীয় নির্ধারনে কনসালটেশন শুরু হয়েছে। লন্ডনের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই পরিকল্পনা । এতে আরো বলা হয়, অগ্নিদুর্ঘটনাগুলো বেশির ভাগ ঘটে থাকে ঘরে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি থেকে। তাই ঘরের যন্ত্রপাতি থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে করনীয় কী-তা আমাদের প্রত্যেকের জানা থাকা জরুরী । বিশেষ করে নারীদের জানা থাকা উচিত, হঠাৎ অগ্নিকাণ্ড ঘটলে কীভাবে তা নিয়ন্ত্রনে আনতে হবে। আর তাই কমিউনিটির সঙ্গে আমরা এনগেইজমেন্ট শুরু করেছি। ভবিষ্যতে অগ্নিনির্বাপনে প্রাথমিক করণীয় নির্ধারনে আমাদের ট্রেনি কর্মসূচি গ্রহনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সভায় জানানো হয়, গ্রেনফিল টাওয়ার ছিলো ২২ তলা উঁচু। তখন এতো উঁচু বিলডিংয়ের অগ্নিনির্বাপনের জন্য সমপরিমান লম্বা লাডার বা মই ছিলো না। আগুন নিয়ন্ত্রনের ব্যর্থতায় সেটি ছিলো একটি প্রধান কারণ। নতুন পরিকল্পনায় লম্বা লাডার সংযোজন করা হয়েছে । যে লাডার দিয়ে ২১ থেকে ২২তলা উঁচু টাওয়ারের উপরে ওঠে অগ্নিনির্বাপন করা যাবে । আগে লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডে যে লাডার ছিলো তা দিয়ে সর্বোচ্চ ১০তলা বিশিষ্ট টাওয়ারের ওপর ওঠা যেতো ।
বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে, লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের এসিসটেন্ট কমিশনার জনাথন স্মিথ বলেন, লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড প্রতি বছর ১৮০ হাজার মানুষের কাছ অগ্নিকাণ্ড সংক্রান্ত কল রিসিভ করে থাকে। এর মধ্যে ১০০ হাজারের বেশি কল রিসিভ করে তাঁরা একশন নিতে পেরেছেন । ছোট-খাটো অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলেও ফায়ার ব্রিগেডে কল করতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান । কারণ ছোট-খাটো অগ্নিকাণ্ড থেকে বড় দুর্ঘটনা ঘটতেও পারে।
ফায়ার ব্রিগেডে কল করার পর প্রায়শই অগ্নিনির্বাপক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছতে বিলম্ব হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, যেকোনো জায়গা থেকে কল পাওয়ার পর আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছার। কিন্তু প্রচণ্ড যানজটের কারণে অনেক সময় যথাসময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছা সম্ভব হয় না।