সিলেটে সমাবেশ করতে না পারায় ‘বিস্মিত’জামায়াত নেতারা
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুলাই ২০২৩
দেশ ডেস্ক:: প্রস্তুতি নিয়েও সিলেটে পর পর দু’দফা সমাবেশ করতে না পারায় ‘বিস্মিত’ জামায়াত নেতারা। ২১ জুলাই শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত নেতারা এ বিস্ময় প্রকাশ করেন।
তারা জানিয়েছেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত আমাদের জনসভার অনুমতি দেয়া হয়নি। ২২শে জুলাই চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানেও জামায়াতের জনসভার অনুমতি দেয়া হয়নি। কিন্তু বার বার কোন কারণে আমাদের জনসভার অনুমতি দেয়া হয়নি সেই বিষয়টি বোধগম্য নয়। জাতির চরম ক্রান্তিলগ্নে পুলিশ প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে সিলেটবাসী বিস্মিত, হতবাক এবং জনগণ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
এদিকে- জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকে নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠ ও আশপাশ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিল। টহল জোরদার থাকায় রেজিস্ট্রারি মাঠ এলাকায় কেউ প্রবেশ করতে পারেননি। এ কারণে জামায়াত কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তারা কর্মসূচি সমাপ্ত করেন। সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ১০ দফা দাবিতে পুলিশ কর্তৃক ২য় বারের মতো জামায়াতের জনসভায় অনুমতি না দেয়ার ঘটনায় সিলেটবাসী বিস্মিত। এর মাধ্যমে আরেকবার প্রমাণ হলো দেশে নাগরিক অধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই। এর মাধ্যমে প্রশাসন একদিকে তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন।
অপরদিকে তারা যে কর্তৃত্ববাদী সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে বিরোধী মতপ্রকাশে বাধার সৃষ্টি করছেন তা প্রমাণিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা সোহেল আহমদ, সিলেট জেলা দক্ষিণের নায়েবে আমীর ও সাবেক দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, জেলা উত্তরের সেক্রেটারি ও সাবেক জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, সিলেট মহানগর সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব ও ড. নুরুল ইসলাম বাবুল, সিলেট জেলা দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ও সাবেক গোলাপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজ নজমুল ইসলাম প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, ১ম বার গত ১৫ই জুলাই শনিবার বেলা ২টায় সিলেট মহানগর জামায়াতের শান্তিপূর্ণ জনসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একদিন আগে শুক্রবার রাতে এসএমপি’র পক্ষ থেকে জনসভার অনুমতি দেয়া হয়নি বলে আমাদের মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ১৫ই জুলাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরা হয় এবং শুক্রবার জনসভার পরবর্তী তারিখ ঘোষণা করা হয়। পুনরায় এসএমপি কমিশনার বরাবরে শুক্রবারের জনসভার ব্যাপারে অনুমতি ও সহযোগিতা কামনা করে আবেদন করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার আমাদের নগর জামায়াতের একটি প্রতিনিধিদল পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং জনসভা সফলে সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করেন। সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর আমীর আরও বলেন, জামায়াত দেশ জাতির কঠিন সময়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। কিন্তু আদর্শিক কারণে সরকার ও প্রশাসন আমাদের ওপর জুলুম নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে।
গত ১৫ জুলাইয়ের রেজিস্ট্রারি মাঠের জনসভা উপলক্ষে আগের দিন ১৪ই জুলাই কেন্দ্রীয় ও সিলেট জামায়াত নেতৃবৃন্দ মাঠ পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে আমাদের ৭ জন নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। শুধু তাই নয়, তাদেরকে পুরনো একটি মিথ্যা মামলায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এমনকি নিরীহ ও নিরপরাধ আমাদের নেতাকর্মীদের রিমান্ড আবেদনের মাধ্যমে তাদের মৌলিক মানবাধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়। আমরা মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত স্থানীয় প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আটককৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করছি। এই সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদ করলেই দমন-পীড়ন চালানো যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।