সিলেট নগরীর মানুষের সেবক হয়ে কাজ করতে চাই: মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীম:: সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে স্মার্ট, গ্রীন, ক্লিন নগরী হিসাবে গড়ে তুলতে চান সিসিকের নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এছাড়া তিনি নগরীর মানুষের সেবক হয়ে কাজ করতে চান। সম্প্রতি একান্ত আলাপকালে এ প্রতিবেদককে এমনটাই জানিয়েছেন নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
চলতি বছরের ২১ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ১৮৬১৪ ভোট। তার নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫১ হাজার ৩২১ ভোট।
আলাপকালে নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমি গত ২১ জন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। যদিও আমি আট নভেম্বর দায?িত্বভার গ্রহণ করবো। ইনশাআল্লাহ আমি পাঁচ বছরের জন্য মানুষকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা বাস্তবায়ন করবো। সিলেট নগরীতে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৫শত ৬ জন ভোটার। সিলেট একটি পর্যটন নগরী আদ্মাতিক নগরী। সিলেট নগরীকে গ্রিন, ক্লিন ও স্মার্ট নগরীতে রূপ দিতে চাই।
দায়িত্বভার গ্রহণ করে প্রথমে কী কাজ করবেন এ প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম কাজগুলো যে করব তার মধ্যে সিলেট নগরীকে ক্লিন করবো। দ্বিতীয় সিলেট নগরী জলাব্ধতা দূরীকরণ। এখানে বৃষ্টি হলে পানি উঠে যায়। ছড়া গুলি খনন হয়নি। সুরমা নদী খনন হয় না অনেক বছর ধরে। আমি এ কাজগুলো করবো। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার দিকেও নজর দিবো। যাতে মানসম্মত চিকিৎসা দেওয়া হয় সেদিকেও খেয়াল রাখবো। আমার পাঁচ বছরের মাস্টার প্ল্যান আছে। ১০০ দিনের একটি প্ল্যান আছে। সেগুলো ইনশাআল্লাহ আমি করবো। আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন ভালোভাবে কাজ করতে পারি।
তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ব্যক্তিগতভাবে প্রবাসীদের অনেক সমস্যা আছে। কিছুদিন আগে আপনি দেখেছেন যে একটি ভূমি আইন পাশ হয়েছে। দলিল যার জমি তার। অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমি দখল করে রাখলেও তা হবে না কারণ প্রমাণ থাকতে হবে। এই জন্য প্রবাসীদের সুবিধা হয়েছে। নতুন প্রজন্মদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, দেশে আসুন, সিলেটে আসুন। নিজ মাতৃভূমিতে আসুন। ইনভেস্ট করার সুযোগ হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
আনোয়ারুজ্জামান সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলার বুরুঙ্গা বাজার ইউনিয়নের পশ্চিম তিলাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নৌশা মিয়া চৌধুরী এবং মায়ের নাম মোছা.গহিনুন্নেছা চৌধুরী। ছয় ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি পশ্চিম তিলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শেষ করে বুরুঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাসের পর সিলেট সরকারি কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করেন। পরে তিনি লন্ডন গিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। তার স্ত্রী হলি বেগম চৌধুরী ইংল্যান্ডের এনএইচএসতে হেলথ অ্যাডভোকেট হিসেবে কর্মরত। এই দম্পতীর তিন সন্তান রয়েছে।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নব্বইয়ের দশকে প্রবাসে পাড়ি জমিয়ে তিনি যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন। তিনি প্রথমে লন্ডন মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য হিসেবেও মনোনীত হন। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং বিভিন্ন সময় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সিলেট-২ আসন (ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।