থানচিতে ২২ পর্যটকের টাকা–মোবাইল ছিনিয়ে নিল সন্ত্রাসীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
দেশ ডেস্ক:: বান্দরবানের থানচিতে ভ্রমণে আসা ২২ জন পর্যটক ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা ও ১৫টি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। গতকাল রোববার উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের ৭-৮ নম্বর ওয়ার্ডের আমিয়াখুম ও ভেলাখুম পর্যটন স্পটে এ ঘটনা ঘটে।
থানচি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে নিরাপত্তা কারণে জিন্না পাড়া পর্যটকদের ভ্রমণের অনুমতি নেই। ২২ পর্যটককে রেমাক্রী পর্যন্ত ভ্রমণে অনুমতি দিয়েছি। পর্যটনকেন্দ্র আমিয়াখুম ও বেলাখুম যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পর্যটক পথ প্রদর্শকেরা তাদের মিস গাইড করেছে। পথ প্রদর্শকদের সঙ্গে আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকালে সভা করে দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ছিনতাইয়ের শিকার পর্যটকেরা হলেন–মো. হাসিবুর রহমান (৩২), মো. নাজমুল (২৫), মো. মাসুদ রানা (৩৮), মো. মারুফ (৩২) তারা ঢাকার সাভার এলাকার বাসিন্দা।
অপর একটি গ্রুপে অনিক মোরল (৪০)–জামালপুর, বিপুল (৪২)–পাবনা, মো. মেহেদী (৪০)–পটুয়াখালী, মো. নিয়াজ (৪০)–জয়পুরহাট, অনীমা (২২)–পাবনা, মো. আদেলউল্লহ (২৬)–ঢাকা, মো. সোহান (২২)–রাজবাড়ী, মো. ফাহিম (২৪)–ঢাকা, মোস্তাহিম (২২)–ময়মনসিংহ, মো. রেদুয়ান (২৫)–ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাসেল (২৭) ও সরিফা (২২)–ময়মনসিংহ, রুবাইয়া (২২)–টাঙ্গাইল, নোমান (২৭) ও নাজমুল (২৭)–নরসিংদী, আবদুল লতিফ (২৮)–ভোলা, মোহতাসেম (২৯)–বরিশাল ও রাসেল (৩০)–জামালপুরের বাসিন্দা।
জানা যায়, গত শনিবার পর্যটক পথ প্রদর্শক মো. সাদ্দাম হোসেন চারজনের একটি গ্রুপ থানচি থানায় নিবন্ধন করে রেমাক্রী খুম হয়ে জিন্না পাড়া বিজিবি ক্যাম্পে পার্শ্ববর্তী থুইসা খিয়ান পাড়া রাত্রি যাপন করে। পরদিন রোববার সকালে আমিয়াখুম ও ভেলাখুম পর্যটন কেন্দ্রে রওনা হন।
শনিবার একই সঙ্গে পথ প্রদর্শক মংহ্লা মারমা ১৮ জন পর্যটক নিয়ে থানায় নিবন্ধন করে রেমাক্রীখুম পর্যন্ত যাওয়া অনুমতি নিয়ে রওনা হয়। কিন্তু ওই ১৮ জনের মধ্যে চারজন নারী, ১৪ জন পুরুষ একই স্থানের থুইসা খিয়ান পাড়ায় রাত্রি যাপন করেন। রোববার মোট ২২ জন ভেলাখুম ও আমিয়াখুম পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমণে পায়ে ট্রেকিং করেন।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীদের জিজ্ঞাসাবাদে ভুক্তভোগী অনিক মোদক বলেন, গত শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) নাফাকুম পর্যটন স্পটে ভ্রমণে যান দুই ভ্রমণ দলের ২২ জন সদস্য। যার মধ্যে চারজন নারী। পরে নাফাকুম ভ্রমণ শেষে রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভেলাখুম ও আমিয়াখুম স্পটে ক্যাম্পিং করেন তারা। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ৮ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল তাদের ক্যাম্পে হানা দেয়। পরে তাদের সঙ্গে থাকা ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা ও ১৫টি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।
অনিক আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের যে দলটি তাদের টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে, তাদের কয়েকজনের পরনে খাকি পোশাক এবং বেইজে কেএনএফ লেখা ছিল বলে দাবি করেন তিনি।
জানতে চাইলে পথ প্রদর্শক মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রশাসনের লিখিত অনুমতি নেই, তবে প্রায়শই পর্যটক নিয়ে আমাদের প্রদর্শকেরা চলে যায়। কিন্তু তখন কিছু হয়নি। হঠাৎ করে অতর্কিতভাবে আমাদের পথ আটকিয়ে দেয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তাদের ৮ জনের মধ্যে ৭ জনের পোশাকের কেএনএফ এর ইউনিফরম ছিল বলে দাবি করেন তিনি। তবে সবার মুখোশ পরা এবং বাংলা সুস্পষ্ট বলতে পারেন।
এ বিষয়ে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘এই ঘটনায় ভুক্তভোগীরা কার্যালয়ে এসে জানালে তাদের থানায় যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।’