ইউকেবিসিসিআই’র আলোচনা সভায় শফিকুর রহমান চৌধুরী : প্রবাসীসেল পুনরুজ্জীবিত করার মাধ্যমে প্রবাসীদের সিংহভাগ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ মে ২০২৪
দেশ ডেস্ক, ১ মে ২০২৪ : যুক্তরাজ্য সফররত বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপিকে নিয়ে ব্রিটেনে ব্যবসায়ীদের অন্যতম শীর্ষ সংগঠন ইউকেবিসিসিআই’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো “ইউকে এনআরবি সম্পর্ক এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান” শীর্ষক আলোচনা সভা । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রবাসীদের বিভিন্ন দাবী-দাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক । তাঁর সহযোগিতা নিয়ে প্রবাসীদের দাবীগুলো পুরণ করতে চাই । তিনি বলেন, আমি প্রবাসীসেলটিকে ঢেলে সাজাতে চাই। ডিআইজিসহ শীর্ষ প্রশাসিক কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করে এটিকে পুনরুজ্জীবিত করবো- যাতে এই সেলের মাধ্যমেই প্রবাসীদের সিংহভাগ কাজ সম্পন্ন করা যায়।
২৮ এপ্রিল রোববার দুপুরে সাউথ ক্যানজিংটনের অভিজাত মিলিনিয়াম গ্লস্টার হোটেলে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ।
ইউকেবিসিসিআই’র ডাইরেক্টর ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া ও রহিমা মিয়ার যৌথ সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত আলোচনাসভার শুরুতে অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ফাউন্ডিং প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ এমবিই। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ ওবিই, প্রেসিডেন্ট এমজি মাওলা মিয়া এমবিই, প্রাক্তণ সভাপতি নাজমুল ইসলাম নুরু ও ইউকেবিসিসিআইর ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর কামরু আলী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম, লর্ড ক্যারন বিলামরিয়া সিবিই ডিএল, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফ, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের জেনারেল সেক্রেটারি ও সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ, এনটিভি ইউরোপের সিইও সাবরিনা হোসাইন ও সাপ্তাহিক জনমত সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা।
অনুষ্ঠানে ইউকেবিসিসিআই’র পরিচালকদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সর্বজনাব ইমাম উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল করিম নাজিম, ওলি খান এমবিই, সাইফুল আলম, করিম মিয়া শামীম, কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী এবং প্রিন্ট এন্ড ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ । মন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান ইউকেবিসিসিআইর ডাইরেক্টর সিদ্দিকুর রহমান জয়নাল, ফারজানা নীলা ও হারুন মিয়া । ইউকেবিসিসিআইর পক্ষ থেকে মন্ত্রীকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান চৌধুরী আরো বলেন, প্রবাসীদের দাবী-দাওয়া পুরণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বদা আন্তরিক ছিলেন । তাঁর সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সবসময় সোচ্চার রয়েছেন । ২০০৮ সালে আমি প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর সংসদে প্রবাসী ভোটাধিকার প্রদানের দাবী জানিয়ে যখন বক্তৃতা করছিলাম তখন জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, অবশ্যই প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়া হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রবাসীদের অবদান আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি ভোটাধিকার দিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে নিয়ে বললেন, আপনাকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিচ্ছে । আপনি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করুন। আমি কল্পনাও করতে পারিনি তিনি আমাকে মন্ত্রী করবেন । আসলে প্রধানমন্ত্রী জানেন কাকে, কোন সময়, কোথায় বসাতে হবে । তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা পালনে সর্বান্তকরণে কাজ করে যাবো । তিনি প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা প্রসঙ্গে বলেন, আমি প্রবাসীদের প্রতি আহবান রেখে যাচ্ছি, আপনারা আপনাদের সমস্যাগুলো লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে আমার কাছে পাঠান । আমার ক্ষমতার মধ্যে যেগুলো নিয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে, সেগুলো আমি করবো। আর যা আমি পারবোনা তা প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে করার চেষ্টা করবো। তিনি প্রবাসীদের জন্য হাউজিং জোন স্থাপনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস ব্যক্ত করেন।
বজলুর রশীদ এমবিই বলেন, এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বাইরে প্রবাসীদের মধ্য থেকে একজন যুক্তরাজ্য-প্রবাসীকে প্রবাসী মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে । এবার যদি আমরা আমাদের দাবীগুলো আদায় করে নিতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে কখনই তা সম্ভব হবেনা । তিনি মন্ত্রীর কাজে সর্বাত্বক সহযোগিতা করে তাঁর মন্ত্রীত্ব সফল করতে সকলের প্রতি আহবান জানান ।
ইকবাল আহমদ ওবিই প্রবাসীদের বিভিন্ন দাবী দাওয়ার পাশাপাশি এনআরবিদের জন্য হাউজিং জোন স্থাপনের প্রস্তাব দেন- যাতে নতুন প্রজন্মের এনআরবি বাংলাদেশ গিয়ে নিরাপদে ফরেন কারেন্সী দিয়ে জায়গা-জমি কিনতে পারে। এতে বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। তিনি ৩০শে ডিসেম্বরকে এনআরবি দিবস ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং প্রধানমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীদের সম্পৃক্ত করে প্রতিবছর সফলভাবে এনআরবি দিবস উদযাপনের আহবান জানান।
এমজি মাওলা মিয়া এমবিই বলেন, প্রবাসীদের দুংখ একমাত্র প্রবাসীরাই বুঝতে পারবে। একজন প্রবাসীকে প্রবাসী মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেয়ায় সকল প্রবাসীই আনন্দিত । সংবাদ বিজ্ঞপ্তি