ডকল্যান্ড ইউনিটের সেহরীর আয়োজন: ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির এক অনন্য মিলনমেলা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ মার্চ ২০২৫
মুসলিম কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন (এমসিএ) ডকল্যান্ড ইউনিটের উদ্যোগে পূর্ব লন্ডনের সামুদা হলে গত ৩ মার্চ এক বিশেষ সেহরীর আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল রমাদানের শিক্ষা ও তাৎপর্যকে উপলব্ধি করা, স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করা এবং ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র মায়ুম মিয়া তালুকদার, যিনি মুসলিম কমিউনিটির ঐক্য ও উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন লন্ডন সাউথ ইস্ট রিজিওনের সভাপতি ও শূরা মেম্বার জনাব আজাদ মিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লন্ডন সাউথ ইস্ট রিজিওনের সেক্রেটারি কাজী পারভেজ, রিজিওন দাওয়া সেক্রেটারি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব মহিন উদ্দিন মজুমদার এবং ক্যানারি ওয়ার্ফ ব্রাঞ্চ সভাপতি জনাব আমিরুল ইসলাম। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ডকল্যান্ড ইউনিটের সভাপতি জনাব ফারুক আলী।
সভাপতি জনাব আজাদ মিয়া তার বক্তব্যে রমাদানের শিক্ষা ও আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রমাদান আত্মনিয়ন্ত্রণ ও আত্মশুদ্ধির মাস, যা আমাদের ব্যক্তিগত উন্নয়ন ও চরিত্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি চারটি মূল বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন-ডেডিকেশন (নিবেদন), ডিসিপ্লিন (শৃঙ্খলা), টাইম ম্যানেজমেন্ট (সময়ের সঠিক ব্যবহার) এবং প্যাশেন্স বা সবর (ধৈর্য)। তিনি উল্লেখ করেন, এই চারটি গুণাবলি অর্জন করতে পারলে একজন ব্যক্তি শুধু আত্মিকভাবে নয়, বরং সামাজিক ও পেশাগত জীবনেও সফল হতে পারেন এবং একজন প্রোডাক্টিভ মুসলিম হিসেবে গড়ে উঠতে পারেন।
প্রধান অতিথি মায়ুম মিয়া তালুকদার বলেন, একটি শক্তিশালী কমিউনিটি গঠনের জন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, মানুষের কল্যাণে কাজ করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, বিশেষ করে তরুণদের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে হবে, যাতে তারা ভবিষ্যতে সমাজের জন্য আদর্শ ও রোল মডেল হয়ে উঠতে পারে।
সেক্রেটারি কাজী পারভেজ ডকল্যান্ড ইউনিটের প্রশংসা করে বলেন, তারা সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে, বিশেষ করে খাবারের আয়োজনের মাধ্যমে সমাজে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার বার্তা ছড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, মানুষকে খাওয়ানো একটি রাসুলের(স.) সুন্নাহ, যা শুধু দানশীলতাই নয়, বরং মানুষের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির মাধ্যম হিসেবেও কাজ করে। আল্লাহ এতে বরকত দান করেন এবং এটি কমিউনিটির ঐক্যকে আরও দৃঢ় করে। তিনি সবাইকে এ ধরনের মহৎ উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
সেহরীর আয়োজনে অতিথিদের জন্য ঐতিহ্যবাহী খাবারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে প্রবাসের মাঝে থেকেও নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্বাদ পাওয়া যায়। এই আয়োজনকে সফল করার পেছনে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি লিডার জনাব মহিন উদ্দিন মজুমদারের বিশেষ অবদান ছিল। সেহরীর শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।
এই আয়োজন শুধু একটি সেহরীর আয়োজন ছিল না, বরং এটি ছিল ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য ও মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি