লন্ডনে ২৪ এপ্রিল শুরু হচ্ছে ‘কেয়ার ফর সেন্ট অ্যান’ চ্যারিটির চিত্র প্রদর্শনী : তুলে ধরা হবে রোমান যুগের টাওয়ার হ্যামলেটসের মানুষের জীবনযাত্রার চিত্র
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ এপ্রিল ২০২৫
দেশ, ১৮ এপ্রিল ২০২৫:: লন্ডনে ‘কেয়ার ফর সেন্ট অ্যান’ চ্যারিটির উদ্যোগে লাইম হাউজের সেন্ট অ্যান চার্চে ক্যানভাসে আঁকা ঐতিহাসিক একটি বিশেষ চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে। আগামী ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার থেকে এই চিত্র প্রদর্শনী শুরু হবে। তা চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পাঁচমাস ব্যাপী চলা এই প্রদর্শনীতে রোমান যুগ থেকে শুরু করে ২০০০ সাল পর্যন্ত টাওয়ার হ্যামলেটস বারার অবস্থান, বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্য এবং মানুষের জীবনযাত্রার চিত্র তুলে ধরা হবে।
১৮ এপ্রিল শুক্রবার কেয়ার ফর সেন্ট অ্যান চ্যারিটির উদ্যোগে লন্ডন-বাংলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা এসব তথ্য জানান। এতে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে ‘স্টিটেচ ইন টাইম’ নামক চ্যারিটি সংস্থা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কেয়ার ফর সেন্ট অ্যানের চেয়ারম্যান ফিলিপ রেডডাওয়ে, স্টিটেস অন টাইমসের ডাইরেক্ট ক্রিস্টিন সিবলবী ও কেয়ার অব সেন্ট অ্যানের ফ্রেন্ডস আনসার আহমদ উল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসব্যাপী একটি বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী আয়োজন করতে যাচ্ছি। লাইম হাউজের সেন্ট অ্যান চার্চে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। প্রদর্শনীতে আমরা ৮টি টাপেস্ট্রি (বৃহৎ ক্যানভাসে আঁকা ঐতিহাসিক চিত্রকর্ম) প্রদর্শন করবো। যে চিত্রকর্মগুলোতে রোমান যুগ থেকে শুরু করে ২০০০ সাল পর্যন্ত টাওয়ার হ্যামলেটস বারার বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অংকিত হয়েছে। এই দুর্লভ টাপেস্ট্রি লাইম হাউস টাউন হলে সংরক্ষিত থাকে। এগুলো খুব কমই জন সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। রোমান আমল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে টাওয়ার হ্যামলেটসের অবস্থান ও এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা কেমন ছিলো-তা চিত্রকর্মে সুন্দরভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। মিলিনিয়াম উদযাপন উপলক্ষে ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত দুই বছর সময়ে মোট ৫০টি চিত্রকর্ম তৈরি করা হয়। এই ৫০টির মধ্যে আমরা ৮টির প্রদর্শন আয়োজন করতে যাচ্ছি। এগুলো তৈরীতে ইস্ট এন্ডের হাজারেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেন। স্থানীয় স্কুল, কমিউনিটি গ্রুপ এবং কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান যেমন মর্গান স্টেনলীর মতো মত সংস্থাও ছিল।
এতে আরও বলা হয়, আমাদের এই প্রদর্শনীটি যৌথভাবে আয়োজন করছি। আমাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে ‘স্টিটেচ ইন টাইম’ নামক চ্যারিটি সংস্থা। এই সংস্থাটি প্রায় ৩০ বছর ধরে টাওয়ার হ্যামলেটসের অনগ্রসর নারী সমাজের উন্নয়নে কাজ করছে। নারীদের বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং দেওয়া হয়। অধিকাংশ বৃটিশ-বাংলাদেশী নারী এখানে এসে ইংরেজী ভাষা ও শেলাই কাজ শিখে নিজেদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলছেন। প্রদর্শনীতে নারীদের তৈরি বিভিন্ন কর্ম প্রদর্শন করা হবে।
উদ্বোধনী দিন (২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার) প্রদর্শনীটি সকাল ১০টা বিকেল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। এরপর প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। উদ্বোধনী দিনে দর্শনার্থীদের জন্য থাকবে বাংলাদেশী ঐতিহ্যবাহী খাবারের ব্যবস্থা। স্টিটেচ এর নারীরা সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তাঁদের কাজের প্রদর্শনী করবেন। এছাড়া মে মাস থেকে শুরু হবে বিভিন্ন অংশগ্রহণমূলক ওয়ার্কশপ, যেখানে আগ্রহীরা সেলাই শেখার সুযোগ পাবেন।
উল্লেখ্য, লাইম হাউজে অবস্থিত ৩০০ বছরের প্রাচীন সেন্ট অ্যান চার্চ হলো প্রখ্যাত ইংরেজ আর্কিটেক্ট নিকোলাস হকসমোরের অসাধারণ স্থাপত্যশৈলীর একটি নিদর্শন। লন্ডনের তার ডিজাইন করা ছয়টি গির্জা রয়েছে। এই গির্জাকে সংশ্লিষ্টরা কমিউনিটির মানুষের একটি প্রাণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তারা কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষকে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে চিত্রকর্ম দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাহলে তারা জানতে পারবেন, টাওয়ার হ্যামলেটস হাজার বছর আগে কেমন ছিল।