সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে পাথর শ্রমিকদের বিক্ষোভ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুন ২০২৫
সিলেট প্রতিনিধি:: সিলেটের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা জাফলং পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে স্থানীয়দের বিক্ষোভ ও বাধার সম্মুখীন হয়েছেন পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সিলেটের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা জাফলং পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে স্থানীয়দের বিক্ষোভ ও বাধার সম্মুখীন হয়েছেন পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জাফলং বাজার এলাকায় স্থানীয় কিছু পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের সদস্য ও শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উপদেষ্টাদের রাস্তা আটকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন রাস্তায় শুয়ে পড়েন। ফলে জাফলং পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে বাধাগ্রস্ত হয় উপদেষ্টাদের গাড়িবহর।
জাফলংসহ সিলেটের সব পাথর কোয়ারির ইজারা প্রক্রিয়া স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষোভকারীরা।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ জানান, গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পর পরই স্থানীয়রা আকস্মিকভাবে উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে দেন। তারা স্লোগান ও বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ দ্রুত তাদের সরিয়ে দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ উপদেষ্টারা নিরাপদে হরিপুর গেস্টহাউজে পৌঁছেন।
এর আগে জাফলং পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সিলেটের নান্দনিক আবেদন, আছে নৈসর্গিক আবেদন। এ রকম জায়গাগুলোয় আমরা আর পাথর উত্তোলনের জন্য ইজারা দেব না। এ জায়গাটা বিশেষ করে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। এখানে ইকোফ্রেন্ডলি ট্যুরিজম তারা করতে পারে। যাতে পাথর যারা উত্তোলন করে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান হয়। আমরা আজ দেখে গেলাম। হয়তো আবার আসব। এটাকে নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা করে ওইটা চূড়ান্ত করতে চাই।’
বালি ও পাথর উত্তোলন নিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জাফলং ইসিএ এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালি ও পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ রকম অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে কেউ জড়ালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে জাফলং ও আশপাশ এলাকার পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। জাফলংয়ের অবৈধ পাথর ক্রাশারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। দ্রুত ক্রাশার মেশিনগুলো সরিয়ে নিতে হবে।’
এ সময় তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তিনি জাফলংয়ের পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন।