লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সফল আয়োজন কমিউনিটি কুয়েশ্চন টাইম উইথ হাইকমিশনার: ‘কমিউনিটির মানুষের আশা-প্রত্যাশা পুরনে কাজ করার অঙ্গীকার’
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০২৫
লন্ডন ২২ জুন ২০২৫:: যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ হাকমিশনের কাছে কমিউনিটির মানুষের আশা-প্রত্যাশা এবং চাওয়া-পাওয়া অনেক বেশী । একজন প্রবাসী হিসেবে নিজের দেশের প্রতিনিধি বা সেদেশের দ্বায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের কাছে এমন চাওয়া স্বাভাবিক একটি বিষয় এবং এটি মৌলিক অধিকারেরই একটি অংশ । আমি পরিবর্তিত পরিস্থিতে দ্বায়িত্ব গ্রহণের পর আমার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কমিউনিটির অনেক সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে বৈঠক হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে । আমি সবার সাথে কথা বলে চেষ্টা করেছি সমস্যা গুলো চিহ্নিত করতে । এর সমাধানে যথাযথ পথ খুঁজে বের করাও আমার দায়িত্ব।
হাইকমিশনার ১৯ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমিতে ‘কমিউনিটি কুয়েশ্চন টাইম উইথ হাইকমিশনার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকসহ কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন । এতে রেওয়াজ অনুযায়ী ক্লাব প্রেসিডেন্ট ও হাইকমিশনারের প্রারম্ভিক রক্তব্য ছাড়া কোনো গতানুগতিক বক্তব্যের সুযোগ ছিলো না।
প্রেস ক্লাব সভাপতি মুহাম্মদ জুবায়ের বলেন, আমরা এই আয়োজনের মাধ্যমে সব কিছুর জবাব বা সমাধান পাবো তেমনটি আশা করি না। আমরা চাই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো বার বার আলোচনায় আসুক । যথার্থ ও সম্মানের সাথে প্রশ্ন করা বা জবাবদিহিতার কালচার অব্যাহত থাকুক। আর সাহস নিয়ে এমন জবাবদিহীমূলক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় আমরা হাইকমিশনারের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই।
জেনারেল সেক্রেটারি তাইসির মাহমুদ বলেন, প্রেস ক্লাব আগেও বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার, ঢাকার বৃটিশ হাইকমিশনার, মন্ত্রী, প্রথম বাংলাদেশি এমপি এবং প্রথম নির্বাহী মেয়রকে নিয়ে এমন আয়োজন করেছে। তিনি বলেন, এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা দুটো বিষয় এচিভ করতে চাই। একটি হলো, লন্ডনের সাংবাদিক ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সাথে হাইকমিশনের একটি ব্রিজ স্থাপন করে দেওয়া । দ্বিতীয়টি হচ্ছে, এই অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধার কথা তুলে ধরা, যাতে নতুন হাইকমিশনার কমিউনিটি সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারনা নিয়ে যেতে পারেন এবং সেই আলোকে কমিউনিটির মানুষের আশা প্রত্যাশা পুরনে কাজ করতে পারেন । তিনি বলেন, একজন হাইকমিশনার রাষ্ট্রের প্রতিনিধি । তাঁর সদিচ্ছা থাকলে হাইকমিশনের সেবার মানোন্নয়ন ও কমিউনিটির জন্য অনেক কাজ করতে পারেন।
কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে প্রশ্ন বা মতামত তুলে ধরেন, ইউকেবিসিসিআই’র চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ ওবিই, বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ডিজি সলিসিটর দেওয়ান মাহদী, ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ওলি খান এমবিই, ব্রিটিশ বাংলাদেশী ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট তোফাজ্জুল মিয়া, সোসাইটি অব বৃটিশ বাংলাদেশী সলিসিটর্স এর প্রেসিডেন্ট সলিসিটর নুরুল গাফফার, বাংলাদেশ সেন্টার লন্ডনের সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসাইন ও একাউন্টেন্ট ক্লাব ইউকে’র প্রতিনিধি এ মুহিত। নেতৃবৃন্দ কমিউনিটির বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন । অনুষ্ঠানে প্রেস ক্লাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী ও ট্রেজারার সালেহ আহমদ সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
সাংবাদিকরা হাইকমিশনের সেবার মান, ওয়েব সাইটের দুর্বলতা, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, নো ভিসা ফি ও দেশী ভেজিটেবল আমদানিতে জটিলতাসহ কমিউনিটির বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন রাখেন ।
বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক লন্ডন সফর সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ও ওঠে আসে । হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম মনোযোগসহ প্রশ্নগুলো শুনেন এবং উত্তর দেন । কিছু জটিল ও কঠিন প্রশ্নেরও মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে।আবিদা ইসলাম বলেন, প্রবাসীরা সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন, প্রবাসীদের জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি জটিলতা দূরীকরণে প্রবাসী ট্রাইব্যুনাল স্থাপন, বার্মিংহামের স্মল হিথ পার্কে বহির্বিশ্বে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলনের দিনকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান, দেশীয় শাক-সবজি আমদানিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে আমার সাথে আলোচনা করেছেন । আমি সরকারের কাছে আপনাদের সেই সব দাবি যথাযথভাবে পৌঁছে দিয়েছি এবং ভবিষ্যতেও দেবো।