বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে প্রবাসী নেতৃবৃন্দের বৈঠক ও স্মারকলিপি প্রদান
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুলাই ২০২৫
প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের দাবী ভোটাধিকার পূর্ণ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্দোলনরত প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম নাসির উদ্দিনের সাথে সাক্ষাৎ ও দীর্ঘ বৈঠক করেছেন।
সম্প্রতি রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার নাজির আহমদের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ বৈঠকে অংশ নেন। ডেলিগেশনে আরও উপস্থিত ছিলেন লন্ডনপ্রবাসী ব্যারিস্টার ইকবাল হোসাইন, ব্যারিস্টার মোজাক্কির হোসাইন এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এম রহমান মাসুম।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে প্রবাসী নেতৃবৃন্দ সরকারের ইতিবাচক আশ্বাস সত্ত্বেও এ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না হওয়ায় প্রবাসীদের মধ্যে বিরাজমান উদ্বেগের কথা কমিশনকে অবহিত করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সতর্কতার সাথে সব বক্তব্য শোনেন এবং কমিশনের গৃহীত পদক্ষেপ ও উদ্যোগগুলোর কথা তুলে ধরেন। পরিষদের নেতৃবৃন্দ ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বৈঠক শেষে প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পরে প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবুল ফজল মু. সানাউল্লাহর সাথেও প্রতিনিধি দল পৃথক বৈঠক করে। সেখানে প্রবাসীদের ভোটার তালিকা প্রণয়ন, ভোট গ্রহণ পদ্ধতি ও কার্যকর বাস্তবায়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে এক প্রতিক্রিয়ায় ব্যারিস্টার নাজির আহমদ বলেন, দীর্ঘ আলাপে যথাক্রমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয় ও নির্বাচন কমিশনার মহোদয়কে খুবই আন্তরিক মনে হয়েছে। তবে তাদের সামনে বহুমুখী বাঁধা ও চ্যালেঞ্জ আছে। ১৪৭টি দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেড় কোটি প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও নিশ্চিত করা চাট্রিখানি কথা নয়। আমরা প্রাবাসীদের ভোটার তালিকা করার বিভিন্ন পদ্ধতি, ভোট গ্রহণের বিভিন্ন উপায় ও মাধ্যম, কমিশনের আরো দৃশ্যমান তৎপরতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও মতবিনিময় করেছি। তাঁরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আমাদের কথা ও পরামর্শগুলো শুনেছেন।
ব্যারিস্টার নাজির আহমদ আরো বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলেছি গত ৫৪ বছরে রাজনৈতিক সরকারগুলো শুধু মুলা ঝুলিয়ে রেখেছিলো, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি। অথচ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন। গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীদের অবদান ও ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পলিটিক্যাল কোন ব্যাগেজ নেই। তাই বর্তমান সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশন যদি প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত না করেন তাহলে আমরা আমাদের জীবদ্দশায় সম্ভবত: এই অধিকার পাবো না। সুতরাং যে কোন মূল্যে আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতেই হবে। দেশের এক দশমাংশ ভোটারদের বাদ দিয়ে বা বন্চিত করে গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর নির্বাচন সম্ভব নয়।