চলে গেলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা লতিফুর রহমান
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জুন ২০১৭
ঢাকা প্রতিনিধি: সাবেক প্রধান বিচারপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমান আর নেই। গত ৬ জুন মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বিচারপতি লতিফুর রহমানের মরদেহ গত ৬ জুন দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয়। বাদ জোহর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জানাজা হয়। বিচারপতি লতিফুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বেলা ১১টার পর আপিল বিভাগ ও একটার পর উচ্চ আদালত বসেননি। জানাজার পর বিকেলে তাঁকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মরহুমের ভাগনে আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, মাস খানেক আগে বিচারপতি লতিফুর রহমানের স্ট্রোক হয়েছিল। প্রথমে ল্যাবএইডে, এরপর অ্যাপোলো হাসপাতালে ও পরে শমরিতা হাসপাতালে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বাদ জোহর জানাজা হয়। জানাজায় সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমীন চৌধুরী, বিচারপতি কে এম হাসান, বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেন ও বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন এবং সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিরা অংশ নেন। এ ছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আইনজীবীদের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, এম আমীর-উল ইসলাম, মওদুদ আহমদ, মঈনুল হোসেন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, আবদুল বাসেত মজুমদার, এ এফ হাসান আরিফ, জয়নুল আবেদীন প্রমুখ অংশ নেন।
জানাজার পর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন ও সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। জানাজা প্রাঙ্গণে এক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘বিচারপতি লতিফুর রহমান অত্যন্ত ভালো লোক ছিলেন। প্রধান বিচারপতি ও আইনজীবী হিসেবে আমি ওনাকে পেয়েছি। অনেক হাসিখুশি ছিলেন, বিচার বিভাগের সাবেক অভিভাবক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত।’ ১৯৩৬ সালের ১ মার্চ যশোরে বিচারপতি লতিফুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। বাবা খান বাহাদুর লুৎফর রহমান ছিলেন যশোরের প্রথিতযশা আইনজীবী।
বিচারপতি লতিফুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৬ সালে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর সেখান থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি নেন। ১৯৬০ সালে তিনি আইন পেশায় যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হন লতিফুর রহমান। ১৯৮১ সালে তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন। ১৯৯০ সালের ১৫ জানুয়ারি তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হন। ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি। ২০০১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন। ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন লতিফুর রহমান। ওই সময় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য তিনি আলোচিত ছিলেন।